দেশি-বিদেশি সিগারেট ও বিড়ি কোম্পানিগুলোর লোভনীয় প্রলোভন এবং অগ্রিম অর্থায়নের কারণে টাঙ্গাইলের প্রান্তিক কৃষকরা ঝুঁকছেন তামাক চাষের দিকে। অধিক লাভের আশায় দিন দিন বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের এক বা দো-ফসলি জমিগুলোতে বাড়ছে বিষাক্ত তামাকের চাষ। এতে শুধু কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে না, পরিবেশও পড়ছে মারাত্মক হুমকির মুখে।
সরেজমিনে টাঙ্গাইলের কালিহাতী, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল সদর ও নাগরপুর উপজেলার চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ কৃষক তামাক চাষে ব্যস্ত। তামাক চাষে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা বীজ, সার, কীটনাশক এবং অন্যান্য উপকরণ কৃষকদের জন্য প্রাথমিকভাবে আকর্ষণীয় মনে হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি সম্পর্কে তারা সচেতন নন।
এক কৃষক আমির আলী জানান, তামাক চাষে অন্য ফসলের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ হয়। যদিও এর প্রভাব শরীর ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর, তবু আর্থিক সুবিধার কারণে তিনি তামাক চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পরিবেশ উন্নয়ন কর্মী সোমনাথ লাহিড়ীর মতে, তামাক চাষে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক জমির উর্বরতা নষ্ট করে। তামাক চাষে জড়িত কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আশেক পারভেজ জানান, তামাক চাষের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। তিনি বলেন, তামাক চাষ রোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারের কঠোর উদ্যোগ প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক চাষ রোধে কৃষকদের জন্য বিকল্প আয়ের সুযোগ তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বাড়িয়ে এবং আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।