কৃষি ও পরিবেশ

কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে নুয়ে পড়েছে প্রকৃতি

কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন,

“কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে,
আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে”

কৃষ্ণচূড়ার যে আবেগ বা অনুভূতির বিশাল একটা যায়গা জুড়ে তা বলার অবকাশ রাখেনা, কবিমন উপমা হিসেবে ব্যবহার করে কৃষ্ণচূড়ার নাম। যেমন- “কৃষ্ণচূড়ার আবেগে ম্লান হয়ে ধরা দিও আমার কাছে। আমি তখন তোমায় ফিরিয়ে দেব না”

ব্যস্ততম পৃথিবীতে যেন সব ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতেই ফোটে কৃষ্ণচূড়া। তার রঙ যেন সতেজ করে দেয় পথিকের মন। কিশোরগঞ্জের প্রকৃতিতে যেন এখন জীবনের স্পন্দন। কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের পশ্চাদে আগরপুর অভিমুখী সড়কের গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখে মনে হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের সঙ্গে ডালে ডালে যেন আগুন লেগেছে। গ্রীষ্মকালে সড়কের দুই পাশে নিজেকে মেলে ধরে এই ফুল।

কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাস,খেলার মাঠের পাশে, সড়কের দুই পাশে এখন কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া, জারুল ফুটেছে। প্রকৃতি মেলে ধরেছে তার আপন রঙ। জেলার প্রতিটা উপজেলায় প্রকৃতি সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙে, কিন্তু বাজিতপুরের ভাগলপুর টু আগরপুর সড়কের জামতলা মোড় অবধি দৃষ্টিনন্দন ফুল নজর কাড়ছে সবার। ভির জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা। ভোরের নরম আলো, তপ্ত দুপুর কিংবা সন্ধ্যা নামার আগেও কৃষ্ণচূড়াসহ এসব দৃষ্টিনন্দন ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন শত প্রকৃতি প্রেমী।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানুষ দল বেঁধে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সঙ্গে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ সেলফি তুলছেন। মোটরসাইকেল বা গাড়ি থামিয়ে ছবি তুলতে দেখা গেল কয়েক তরুণকে। উঠতি বয়সি কিশোর-কিশোরীরা ভিড় করছেন ফুলের সঙ্গে নিজের একটি মুহূর্তকে বন্দি করতে।

ঘুরতে এসেছেন রফিকুল ইসলাম তিনি পিডিবিএফ বাজিতপুর কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। তিনি জানান, অফিসের কাজে ভাগলপুর আসছিলাম কৃষ্ণচূড়ার রুপ দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না, ভাবলাম একটু সৌন্দর্যের সঙ্গ দিয়ে যায়। কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখে মনটা হালকা হয়ে গেছে। বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন ইপক হাসান হোসেনপুর থেকে। তিনি বলেন, প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছি। এমন দৃশ্য মন ভালো করে দেয়। তাই এখানে ঘুরতে এসেছি। ফুলের সঙ্গে ছবিও তুলেছি।

কৃষ্ণচূড়ার আরেক নাম ‘গুলমোহর’। আর কৃষ্ণচূড়ার মতো দেখতে হলুদ ফুল হলো রাঁধাচূড়া। জেলার অনেক স্থানে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে প্রকৃতি তার আপন রঙ হারিয়ে ফেলছে। গাছ কেটে স্থাপনা নির্মাণের ফলে এখন এসব প্রাকৃতিক দৃশ্য দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।

পরিবেশবিদরা মনে করেণ, প্রকৃতির মাধুর্যতা, স্নিগ্ধতা ছড়াতে, প্রকৃতির ভারসাম্য ধরে রাখতে সবাইকে উদ্যোগী হয়ে এসব গাছ লাগানো উচিত চারদিকে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker