নড়াইল

নড়াইলে কুড়ানো শামুকে কর্মসংস্থানের হয়েছে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের

নড়াইলে শামুক কুড়িয়ে ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। নড়াইল জেলার বিল অঞ্চলে শামুক কুড়ানো থেকে আয় হচ্ছে বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার শামুক পাড়ি দিচ্ছে যশোর, খুলনা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায়।  মৌসুমি এ কাজে সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে ২ হাজারেরও বেশি মানুষের।

কৃষি প্রধান জেলা নড়াইলে প্রায় ৮ লাখ মানুষ বসবাস করা এই জেলা বিল ও মাছের ঘের দিয়ে বেষ্টিত। প্রতি বছরের মতো এবারও বিল থেকে শামুক কুড়িয়ে মৌসুমি কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের। নারী-পুরুষ মিলে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় করে সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। শামুকের ভেতরের অংশের পাশাপাশি খোলারও বাড়ছে ব্যাপক চাহিদা। যা এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে এনেছে নতুন গতি।

Image

নড়াইল শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বিল অঞ্চলের হুগলাডাঙ্গা গ্রামের নারী-পুরুষ  প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটতেই ছোট নৌকা নিয়ে যান শামুক কুড়াতে। কুড়িয়ে আনা শামুকের ভেতরের অংশ বের করে বিক্রি করেন মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে এবং খোলাটা বিক্রি করেন খোলা ব্যবসায়ীদের কাছে। প্রতিদিন একেকজন নারী-পুরুষ ২০ থেকে ২৫ কেজি শামুক বিক্রি করে। তাদের আয় হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

শুধু হুগলাডাঙ্গা গ্রামে নয়, জেলার লোহাগড়া, কালিয়া এবং সদর উপজেলার শোলপুর বিল, ইছামতি বিল, কলোড়াসহ ১২টি বিলের শামুক কুড়িয়ে একেকজন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় ১৫ হাজার টাকা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার শামুক যাচ্ছে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, মাগুরাসহ বেশ কয়েকটি জেলায়।

নড়াইল সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, পড়া লেখার পাশাপাশি সে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন সকালে বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি করে থাকে।

কালিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর কালু মিয়া শেখ জানান, সংসার চালানোর জন্য তিনি বিল-খাল থেকে শামুক সংগ্রহ করে মৎস্য চাষিদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। এতে তার প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা আয় হয়ে থাকে। যা দিয়ে তিনি সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকেন।

নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মাছের খাদ্য হিসেবে শামুকের ব্যবহারকে আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি মৎস্য চাষিদের। কারণ কাঁচা শামুক খাওয়ানোর ফলে মাছের শরীরে রোগ জীবাণুর এবং গ্যাসের সৃষ্টি করে।

পরবর্তীতে ওই মাছ খেলে মানুষের শরীরেও নানা রোগ জীবাণু ছড়ায়। শামুক মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। খাল বিলে বেশি পরিমাণ শামুকের বিচরণ থাকার কারণে পানি ও মাটির উর্বরতা বাড়ে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। শামুক মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার না করার জন্য ঘের মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker