ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ছেলের নির্যাতনে ৩ মাস ধরে বাড়ি ছাড়া বৃদ্ধ মা-বাবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলাস্থ কোড্ডা গ্রামের বৃদ্ধ হোসেন মিয়া ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম ৩মাস যাবৎ ছেলের নির্যাতনের কারণে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। ছেলে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে তাদেরকে। তাদের ঘরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তালা।

এ ঘটনায় গত ১৭ই অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কাছে বাড়িতে ফেরার আবেদন করেন রাশেদের বৃদ্ধা মা আয়েশা বেগম। ওই আবেদনে এলাকার উশৃঙ্খল লোকদেরকে নিয়ে তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করার অভিযোগ করা হয় ছেলের বিরুদ্ধে। এর আগে ওই ছেলের বিরুদ্ধে আয়েশা বেগম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় ৩০ সেপ্টেম্বর জেলে যান রাশেদ মিয়া। ঐদিনই রাশেদের স্ত্রীর ভাই পাশের ঘাটিয়ারা গ্রামের রায়হান মোল্লা কোড্ডা গ্রামের ফিরোজ মিয়া, নিয়ামত উল্লাহ, দুল্লুক মিয়া, সোহাগ মিয়া, রেজ্জেক মিয়া, সাচ্চু মিয়া, মনির মিয়া, রহমত আলী, মিরাজ মিয়া, বিশাল, রোকসানা বেগমসহ কয়েকজন মিলে আয়েশা বেগম ও তার বৃদ্ধ স্বামী হোসেন মিয়াকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে।

এরপর তালা দিয়ে দেন ঘরে। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে বৃদ্ধ হোসেন মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে স্বজনের বাড়িতে থাকছেন। বাড়িতে ফিরলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে বাড়িতে রাশেদের স্ত্রী রোকসানা রয়েছেন। এ ঘটনায় সেখানকার সর্দার-মাতব্বররা রাশেদের পক্ষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

হোসেন মিয়ার ৬ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় রাশেদ। পৈত্রিক সম্পত্তিতে তার অংশ তিনি আগেই বাবার কাছ থেকে লিখে নেন। এরপর পার্শ্ববর্তী গ্রাম ঘাটিয়ারায় শ্বশুরবাড়িতে ঘর উঠিয়ে বসবাস করতে থাকেন। পরে আবার নিজের বাড়িতে ঘর উঠান। এর মধ্যে হোসেন মিয়া তার স্ত্রী বাকি পাঁচ সন্তানের নামে সম্পদ লিখে দিলে রাশেদ বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

রাশেদের ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী এরশাদ মিয়া জানান, তারা চার ভাই দুই বোন। বাবার নামে থাকা জমিজমার মধ্যে ৪১ শতাংশ জায়গা ২০০৮ সালে তার বড় ভাই রাশেদ মিয়ার নামে লিখে দেন। বাকি ৬১ শতাংশ ৭৫ পয়েন্ট তার মা ও ৫ ভাইবোনের নামে লিখে দিয়েছেন। এর মধ্যে বাড়ির জায়গাও রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে পাঁচ মাস আগে দেশে আসেন এরশাদ। এর মধ্যে তিনমাস ধরে বাড়িতে উঠতে পারছেন না তিনি।

আয়েশা বেগম জানান, আমার বড় ছেলে রাশেদ, ভাতিজা ফিরোজ, ফিরোজের ছেলে নিয়ামতুল, ওবায়দুল, সোহাগ, মনির, সাচ্চু সবাই মিলে আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এরপর থেকে তিনমাস যাবৎ বাড়িতে ঢুকতে পারছি না। তাই আমি প্রশাসনের কাছে এর তদন্ত পূর্বক সঠিক বিচার দাবি করছি।

Author

মো: মেহেদী হাসান, ব্রাহ্মনবাড়িয়া প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ জুন থেকে মিশন ৯০ নিউজে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker