দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউক্রেন বুধবার রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী মোতায়েন করার ‘হুমকির’ জবাবে নিরাপত্তা সহযোগিতা দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিউল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পর এই বিবৃতি এলো। বৈঠকে দুই দেশ পিয়ংইয়ংয়ের হাজার হাজার সেনা পশ্চিম রাশিয়ায় মোতায়েন করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ‘রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সামরিক সহযোগিতা থেকে সৃষ্ট নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউক্রেন একসঙ্গে কাজ করবে’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলেছে, ‘উভয় পক্ষ রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন এবং রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে অস্ত্র ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে।’
দক্ষিণ কোরিয়া যুদ্ধরত দেশগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ না করার দীর্ঘস্থায়ী নীতি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দেওয়ার পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই সফর হলো। বিবৃতিতে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
তবে ইউন জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়া যদি অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে প্রাথমিক চালানটি প্রতিরক্ষামূলক প্রকৃতির হবে।
গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, তার দেশ প্রয়োজনীয় সামরিক সহায়তার একটি তালিকা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই তালিকায় আর্টিলারি সহায়তা ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়া সরাসরি ইউক্রেনকে কিভাবে সাহায্য করবে, তা মূলত ‘এই সংঘাতে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণের মাত্রার ওপর’ নির্ভর করবে।
তিনি আরো বলেছিলেন, ‘অস্ত্র সরবরাহের সম্ভাবনা আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ইউক্রেন পশ্চিমা বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। দেশটি এই ধরনের আরো সরবরাহের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এখনো প্রযুক্তিগতভাবে যুদ্ধে রয়েছে এবং পশ্চিমা অস্ত্রশিল্পের চেয়ে দীর্ঘদিন উপেক্ষিত অস্ত্র উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি দক্ষিণ কোরিয়া অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।