মাদারীপুর

শিবচরে বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কারণে ভেঙ্গেছে বেড়িবাঁধ, হুমকিতে হাজার পরিবার

মাদারীপুরে বালু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে বিশেষ করে নষ্ট হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সম্পদ। দুশ্চিন্তায় পরেছেন হাজার মানুষ। বালু উত্তোলনের কারণে মাদারীপুরের শিবচরে আড়িয়াল খা নদের ওপর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ ইতোমধ্যে ভেঙ্গে গেছে ।

গত ২ নভেম্বর শিবচরের বহেরাতলা-কলাতলা পয়েন্টে বাঁধের একাংশ ভেঙ্গে যায়। এতে এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদের পাড়ে বসবাসকারীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

শুধু কলাতলা পয়েন্টই তা নয় এখন শিবচরের কাঠালবাড়ি, চরজানাজাতসহ একাধিক স্থানের চিত্রই এরকম। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে শিবচরের চরজানাজান ইউনিয়নের কমপক্ষে ৫টি ওয়ার্ড নদী গর্ভে চলে গেছে।

বালু উত্তোলনের ফলে নদী গর্ভে চলে যাওয়ার হুমকি রয়েছে কাঠালবাড়ি ইউনিয়নসহ ১০টি ইউনিয়নের হাজার মানুষ। বছরের পর বছর পদ্মা, আড়িয়াল খা নদী থেকে ইজারা ছাড়াই এভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করে অনেকেই অবৈধ টাকার পাহাড় করেছেন।

এদিক অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার এবং হুমকির মুখে পড়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি, বন্দরখোলা, মাদবরেরচরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বালু ব্যবসায় জানান, পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলনের অনুমিত দেয়ার নামে ভুয়া কাজগপত্র তৈরি করেছে হাতেম বেপারী, মহসিন, তানবীর, রাজু সরকার, তুহিন মুন্সি, শাহিন মুন্সি, মুজাফ্ফর মুন্সি। এরা বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদানের ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে বিভিন্ন মানুষ দিয়ে বালু উত্তোলন করায়।

তবে অভিযুক্তরা বালু উত্তোলনের ভুয়া কাগজপত্র বানানো ও বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অথচ মাদারীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি।

এব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র নাজমুল হোসেন বলেন, মাদারীপুরে কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করা হয়নি। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

চরজানাজাত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদা বেগম বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে আমাদের গ্রাম হুমকির মুখে। রাতের আধারে এরা বালু উত্তোলন করে, কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের খান বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে শিবচরে প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সামনে আরও ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker