নওগাঁ

নওগাঁয় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সাংবাদিক

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে নওগাঁয় শহিদুল ইসলাম নামে এক সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার ওই সাংবাদিক বার্তা২৪ ডটকম এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দপুর গ্রামের নব মুসলিম অমিত হাসান। তার পরিবারকে বেশকিছু ধরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম ও সাংবাদিক একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ওই এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য ক্যামেরায় ধারণ করছিল। এসময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার রেজাউল হকের ছেলে ওয়াহেদুর রহমান রকিসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এবং আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। এসময় শহিদুল ইসলামকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রকির বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে অবস্থা খারাপ হবে দেখে সাংবাদিক একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ঘটনাস্থল থেকে আগেই চলে আসে।

সংবাদ পেয়ে নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় সাংবাদিক শহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, হিন্দু ধর্ম থেকে নব মুসলিম হওয়া এক পরিবারকে ওয়াহেদুর রহমান রকি, আরিফ, মুন্না দেওয়ান, শামীম হোসেন, আল আমিন, রাকিব, রাজনসহ আরও অনেকে মিলে অবরুদ্ধ রেখে তাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। এমনকি ওই পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও ভয়ে থানা পুলিশের কাছে যেতে পারেনি।

আহত সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার সংবাদ পেয়ে সত্যতা জানতে সহকর্মী একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ঘটনাস্থলে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় ওয়াহেদুর রহমান রকি নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন এসে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এক পর্যায়ে মারধর করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এরপর মুন্না নামের একজন মোবাইল ফোনে নব মুসলিমের বিরুদ্ধে সংবাদ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে চায়। সেটি আমি প্রত্যাখ্যান করলে তারা আবারও মারধর করে। এরপর রকির বাড়ির সামনে নিয়ে এসে আমাকে আবারও মারধর করে আটক করে রাখে।

পরে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা জানার পর থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। মাথা ও ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা করছে।

ভুক্তভোগী নব মুসলিম মোছা. নূরে জান্নাত বলেন, আমি আল্লাহর ভয়ে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম হয়েছি। মুসলিম হওয়ার পর থেকে স্থানীয় ইউপি মেম্বার রেজাউল করিমের ছেলে ওয়াহেদুর রহমান রকি আমাদের কাছে থেকে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে বাড়ি থেকে বের হতে দিবে না। টাকা না দিতে চাওয়ায় গত প্রায় ১৫ দিন আগে রকিসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। পরে সাংবাদিককে জানালে দুপুরের দিকে শহিদুল ইসলাম ও তার সহকর্মী মিন্টু এসে আমাদের বক্তব্য নিচ্ছিল। এসময় রকি ও তার লোকজন এসে সাংবাদিকদের গালাগালি করে ও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে শহিদুলকে মারপিট করে আটকে রাখে।

নওগাঁ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মেজবাহ বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই বিষয়ে থানায় এখনও লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Author

মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker