চট্টগ্রাম

মামলা হলেও গ্রেফতার হয়নি বাকলিয়ার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা সাদ্দাম

গভীর সখ্যতা ছিলো চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছিরের সাথে। সেই সুবাধে ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিকেই আন্দোলনের বিরোধিতা করে তারা। এমনকি আন্দোলন বানচাল করতে ছাত্র আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের একটি থানায় মামলাও দায়ের করা হয়। এখানেই শেষ নয় হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি বা কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয়াসহ নগরীর বেশ কয়েকটি থানায় একাধিক মামলার আসামী। চট্টগ্রাম বাকলিয়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা মো: সাদ্দাম, পিতা-মৃত আলী আজম। মাতা- রোকেয়া বেগম। রাজাখালী রোড় চাক্তাই, শান্তি সওদাগর গল্লি। মোশাররফ হোসেন রোড। এই যুবলীগ নেতা নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অর্থ যোগান দাতা হিসেবে ও পরিচিত।

গত ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরই এর নাম উল্লেখ করে বাকী আরও ছয়জনকে আসামী করে নগরের কোতোয়ালি থানায় নির্বিচারে ছাত্র জনতাকে মারধর করার অভিযোগ এনে একটি মারামারির মামলা দায়ের করা হয়। একি মামলার আর এক আসামি মাদক কারবার মো: সুমন (৪২), পিতা- ইসহাক মিয়া, ইসলাম মিয়ার বাড়ী, সোবাহানিয়া মাদ্রাসার পার্শ্বে, আসাদগঞ্জ, এরা দুজন তবুও ধরাছোঁয়ার বাহিরে মো: সাদ্দাম ও মো: সুমন মামলা হওয়ার পরেও গ্রেফতার হয়নি। মামলার বাদী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজ মনে করছেন, প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছে বিধায় এখনও এলাকায় বীরদর্পে বিচরণ তাদের।

Image

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর চড়াও হয় যুবলীগ নেতা সাদ্দাম ও সুমন। এ সময় তারা নগরের কোতোয়ালি মোড় থেকে নিউ মার্কেট মোড় পর্যন্ত দফায় দফায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায়। ছাত্রদের মারধর করে প্রশাসনের গাড়িতে তুলে দেয়।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কয়েকজন ছাত্রকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে মেরে জখম করে। 

Image

স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগ ও সরেজমিনে বাকলিয়া থানা এলাকায় ঘুরে জানা যায়, একটা সময় কিছুই ছিল না সাদ্দাম হঠাৎ আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের দালালী করে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায় অবৈধ পন্য সরবারহ করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যায়। এ দুজনের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, মাদক সরবরাহের সাথে জড়িত হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনের মোটর পাটস দিবে বলে স্থানীয় এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে শেষে মালামালগুলো দেয়নি। সবমিলিয়ে এ খাতেও বিপুল অংকের টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে যুবলীগ নেতা সাদ্দামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত আগষ্টে কোতোয়ালী থানায় একজন ভুক্তভোগী একটি মামলাও দায়ের করেন।

Image

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করেনি। এইসব আকাম করেই এখন তারা কোটিপতি। আমাদের এলাকায় তার নামে অনেক সম্পদ আছে। কিন্তু এই সাদ্দাম এক সময়ে দিন মজুরের কাজ করতো। হঠাৎ এত টাকার মালিক কিভাবে হলো তা অবাক করা বিষয়। সাদ্দাম ও সুমন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, তাদের বিরুদ্ধে কেউই মুখ খুলে না। 

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে যুবলীগ নেতা সাদ্দামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে সুমনের মোবাইলেও কল করে তাকে পাওয়া যায়নি। 

Image

এ বিষয়ে বক্তব্য চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি মুঠোফোনে বলেন, আসামীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে মারামারির অভিযোগটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। জড়িত থাকলে শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker