জাতীয়

‘তারা বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে তাও জানি না’

বন্যা পরিস্থিতির কারণে ফেনীতে মোবাইল টাওয়ারগুলো কাজ না করায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না স্বজনরা

‘আমার অসুস্থ মা আর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে সেটাও জানি না,’ ফেনীতে থাকা মা ও স্ত্রীকে নিয়ে শঙ্কা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আবদুল কাইয়ুম।

চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে ফেনী জেলায় মোবাইল টাওয়ারগুলো কাজ না করায় গত চারদিন ধরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি কাইয়ুম।

তিনি বলেন, আমি আমার অসুস্থ মা, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং আমার চাচাতো ভাই যে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী তাদের নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জিএম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে থাকে কাইয়ুমের পরিবার।

কাইয়ুমের মতো আরও অনেকেই তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীতে গত তিন দিন ধরে মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছে যে তারা তিন দিন আগে ফোনে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিল।

গতকাল রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় ফেনীর ৯০ শতাংশের বেশি মোবাইল টাওয়ার কাজ করছিল না। বিটিআরসির তথ্য অনুসারে, ফেনীতে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ, ৬৫৬টি টাওয়ারের মধ্যে ৫৯০টিতেই সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন সিফাত বলেন, আমি এখন পর্যন্ত আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। শুক্রবার আমাকে একটি উদ্ধারকারী টিম জানিয়েছে যে তারা আমার পরিবারের সদস্যদের ছাগলনাইয়া উপজেলায় তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু আমার ভাইয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি খুবই উদ্বিগ্ন।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিসা শারমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, তিন দিন ধরে তিনি তার মামার পরিবারের কোনো খোঁজ জানতে পারেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী জাবির আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি তিন দিন আগে আমার দাদা এবং দাদির সঙ্গে কথা বলতে পেরেছিলাম। তারা তখন জানিয়েছিলেন পানি বাড়ির নিচতলায় ঢুকে গেছে। তারা ছাদে অবস্থান বরছেন। কিন্তু এখন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, বাংলাদেশে চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলার ৪৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৫ জন মারা গেছেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker