নওগাঁ

নওগাঁয় অস্ত্রোপচারে ব্যর্থতার পর রোগীকে মারধরের হুমকি

নওগাঁয় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল অস্ত্রোপচার এবং প্রতিকার চাইতে গেলে রোগী ও তাঁর মাকে মারধরের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। নওগাঁ সদর হাসপাতালের কিডনি ও ইউরোলজি রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা: গোলাম সাকলাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, জেলা সদরের পারনওগাঁ সরদারপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল মালেক প্রস্রাবের সমস্যা নিয়ে মাস দুয়েক আগে সদর হাসপাতালের ড: গোলাম সাকলাইনের কাছে যান। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রস্রাবের থলিতে পাথর জমেছে জানিয়ে দ্রুত অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। শহরের প্রাইম ল্যাব অ্যান্ড হসপিটালে কম খরচে অস্ত্রোপচার করে দেবেন বলেও জানান। পরে ৭ মে প্রাইম হাসপাতালে ভর্তি হন মালেক। সেখানে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ডা: গোলাম সাকলাইন অস্ত্রোপচার করলেও পাথর বের করতে পারেননি। পরে মেশিনের সাহায্যে পাথর বের করতে হবে জানিয়ে মূত্রথলি সেলাই করে রোগীকে ছাড়পত্র দেন চিকিৎসক। তবে অস্ত্রোপচারের পর ক্ষতস্থানে তীব্র ব্যথা ও রক্তপাত শুরু হলে মালেককে রাজশাহী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ফের অস্ত্রোপচারে পাথর অপসারণ করা হয়। এ ছাড়া মূত্রথলিতে একটি পাইপ পাওয়া যায়, যা আগের অস্ত্রোপচারের সময়ের বলে জানান চিকিৎসক। এ ঘটনায় রোগীর অতিরিক্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। এ নিয়ে মালেক সম্প্রতি মা ও দুই স্বজনকে নিয়ে ডা: সাকলাইনের কাছে গেলে তিনি মারধর ও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে গত মঙ্গলবার বিকেলে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন মালেক।

ভুক্তভোগী মালেক বলেন, ডা: সাকলাইন পাথর তো বের করতে পারেননি, আবার মূত্রথলির ভেতর একটি পাইপ রেখে দেন। দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারে আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি মারধরের হুমকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভুক্তভোগীর মা মালেকা বেগম বলেন, চিকিৎসক যদি ভুল অস্ত্রোপচার করে তাহলে কীভাবে তাদের বিশ্বাস করব। আবার সুরাহার জন্য গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এমন অবস্থায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে জানতে ডা: সাকলাইনের চেম্বারে গেলে তিনি এ প্রতিবেদকের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘হু আর ইউ! আমি আপনার কাছে কেন মন্তব্য করব?’ পরে তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারটা ক্রিটিক্যাল ছিল, তাই করতে পারিনি, এটা আমার ব্যর্থতা। এটা মেশিন ছাড়া হবে না জানিয়ে ১৫ দিন পর আসতে বলেছিলাম। তবে তারা রাজশাহীতে চলে যান। রোগীকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে বলেন, তারা এসে আগে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে আমি ক্ষিপ্ত হয়ে খারাপ ব্যবহার করেছি। 

নওগাঁর সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোগী বা সংবাদকর্মীর সঙ্গে খারাপ আচরণ কখনোই কাম্য নয়। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

Author

দ্বারা
মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker