ঢাকা

দোহারের বাহ্রা ঘাটে প্রাণচাঞ্চল্য

শহীদুল ইসলাম শরীফ, স্টাফ রিপোর্টার:

নতুন আঙ্গিকে সেজেছে বাহ্রাঘাট । আগে সবাই মৈনট ঘাটে ভিড় করলেও এখন বাহ্রা ঘাটও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাহ্রা ঘাটকে কেও অভহিত করে মিনি পতেঙ্গা আবার কেও বাহ্রা পোর্ট।

Image

নদীভাঙন ঠেকাতে পদ্মা নদীর পাড়ের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে ব্লক। বিস্তৃত ব্লকের মাঝে মাঝে তৈরি করা হয়েছে পাকা সিঁড়ি। এই ব্লকের উপর দিয়েই ঘুরে বেড়ায় দর্শনার্থীরা। সেখানে জমজমাট আয়োজন। পদ্মার কোল ঘেষে আছে বাহ্রা বাজার। দাড়িয়ে আছে মসজিগ। নয়নাভিরাম সবুজায়নের মধ্য দিয়ে কিছু দূর এগিয়ে গেলে দেখা যাবে বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। নিয়মিত বসছে হরেক রকম খাবার এবং বাচ্চাদের খেলনার দোকান। পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্যে দর্শনার্থীরা উপভোগ করে চট্টগ্রামের সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গার আবহ।

পদ্মায় ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে বোট ও ইঞ্জিন চালিক নৌকা। প্রকার ভেদে ভাড়া বিভিন্ন হয়ে থাকে। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় গান বাজনারও ব্যবস্থা আছে। ভ্রমন পিয়াসিরা গানের তালে তালে পদ্মার বুকে ভেসে বেড়ায়। ইঞ্জিন চালিত একটি নৌকায় ‘পদ্মার ঢেউ রে, মোর শূন্য হৃদয়-পদ্ম নিয়ে যা, যা রে’, কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গান বাজিয়ে পদ্মার বুক চিড়ে দর্শনার্থীদের নিয়ে ছুটে চলেছে।

Image

পদ্মাপাড়ে পাওয়া যায় তাজা ইলিশের স্বাদ। কিছুটা বেশি দাম হলেও জেলে নৌকা থেকে কেনা যায় টাটকা ইলিশ। একদা পদ্মা নদীর করাল গ্রাসে নদীপাড়ের জনজীবন ছিল বিপর্যত। স্থানীয় বহু মানুষ ঘড় ছাড়া হয়েছে। পরবর্তীতে পদ্মার পাড়ে স্থাপন করা হয় ব্লক। যা সবার কাছে প্রশংসনীয়। ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গন থেমে গেলে ধীরে ধীরে নজরে আসে মানুষের। উঠছে নতুন ঘড়বাড়ী। পদ্মার পাড়ে নজরে আসবে সবুজ শস্য ক্ষেত ও গাছপালা। বর্ষাকালে পদ্মা নদীর পানি অনেক উপরে উঠে আসে তখন ব্লক গুলি তেমন নজরে আসে না।

শীতকালে পানি কমে যায়, চর পড়ে নদীর বিভিন্ন স্থানে। নদীর বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠা চরে যেতে পারা যায়। তাছাড়া শীতকালে নদী থাকে শান্ত এবং পানিও ঘোলাটে থাকেনা। নদীর পাড়ে ব্লক গুলো স্পষ্ট দেখা যায়। এই ব্লগগুলোর উপর বসে সূর্যাস্ত দেখার অনুভূতিই অন্য রকম। চলার পথে মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সাথে আলাপ কালে জানা যায়, আগে বাহ্রা ঘাট থেকে হাই স্কুল পর্যন্ত দর্শনার্থীর ভীড় থাকত। গত ঈদউল আজহার দিন থেকে পদ্মা গ্রীন গার্ডেন নামে একটি রেষ্টুরেন্ট খোলায় দর্শনার্থীর প্রসারিত হয়েছে সে পর্যন্ত। স্কুল থেকে ঐ রেস্টুরেন্ট এর দূরত্ব পায়ে হেঁটে প্রায় ৩০ মিনিট। সেখানে দেখা গেছে বিভিন্ন রকমের বাতি দিয়ে সাজানো, রেস্টুরেন্টে দর্শনের দর্শনার্থীদের চোখে পড়ার মত। রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে রয়েছে বাগান, পানির ফোয়ারা, বসার জায়গা, রয়েছে খাওয়ার ব্যবস্থা। দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য বাজছে গান। এখানে প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা।

কথা হয় মাটির গৃহস্থলী সামগ্রী বিক্রেতা অমলের সাথে, পদ্মার পাড়ে বাড়ির সাথে দোকান খুলে মাটির সামগ্রী বিক্রি করছে। সে দেখেছে পদ্মার ভয়াল রূপ, দেখেছে পদ্মা ভাঙ্গা গড়ার দৃশ্য। এখন সে শংকা তার আর নেই। চায়ের দোকানদার মনির হোসেন সে গত পাঁচ বছর যাবত বাহ্রা ঘাটে চা বিক্রি করছে। সে পদ্মা গ্রীন গার্ডেন রেস্টুরেন্টের কাছে চায়ের নতুন দোকান খুলবে। কারণ হিসেবে জানায় রেস্টুরেন্টের দিকে দর্শনার্থীদের ভিড় এখন বেশি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker