জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাৎসরিক গ্রাম্য মিলন মেলা উপলক্ষে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘লাঠি-বাড়ী’ ও ঢেঁকি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় (উত্তরপাড়া) এলাকায় গ্রামবাসীর আয়োজনে এ লাঠি-বাড়ী ও ঢেঁকি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝেও ছিল উৎসবের আমেজ। লাঠি খেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সের নারী-পুরুষ। এদিকে আয়োজনকে কেন্দ্র করে সেখানে বসে এক গ্রামীণ মেলা।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন- বায়োফার্মা এগ্রোভেট লিমিটেড এর রিজিওনাল সেলস্ ম্যানেজার সাইদুজ্জামান সেলিম।
বগারপাড় ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লাল মিয়া সরকার এর সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক জে. এইচ মানিক মিয়ার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল হাই সরকার, ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর ছাত্তার, প্রভাষক মোস্তাসিন বিল্লাহ, চাকুরিজীবি রাসেদুল ইসলাম বাবু, লাইজু, বাচ্চু মিয়া, সুশান্ত, রিপন, কামাল প্রমুখ।
লাঠি খেলা দেখতে আসা নারী-পুরুষরা বলছেন, ‘একসময় লাঠি খেলা ছিল মানুষের কাছে জনপ্রিয় খেলা। গ্রামের সাধারণ মানুষের বিনোদনের একমাত্র উৎস ছিলো এ লাঠি খেলা। ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি বৈশাখী মেলা, বিয়েসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মানুষকে আনন্দ দিতে আয়োজন করা হতো। কিন্তু এখন এই খেলা আর দেখা যায় না। অনেকদিন পর সেই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা দেখতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে।
প্রথমবারের মতো এ খেলা দেখতে আসা শিশু কিশোররা বলেন, ‘এ ধরনের খেলা আগে আমি কখনো দেখেনি। লাঠি নিয়ে একে ওপরের লাঠির ওপর মারছে খুব ভাল লাগছে।
এদিকে লাঠিয়াল নেতা আওয়াল মিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন জোগাতে আমরা লাঠি খেলা দেখাই। ১০-১৫ বছর ধরে এ লাঠি খেলা দেখিয়ে আসছি। তাদের আনন্দে আমরাও আনন্দিত হই।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাইদুজ্জামান সেলিম বলেন, গ্রামীণ খেলাধুলা কমে যাওয়ায় যুব সমাজ মাদকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। তাই যুব সমাজকে মাদকের পথ থেকে দূরে রাখতে এ ধরনের আয়োজন করা প্রয়োজন। গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরই এ ধরনের খেলার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।
আয়োজক কমিটি বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য এই লাঠি খেলার আয়োজন করেছি। এ লাঠি খেলা দেখতে আমাদের এলাকা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে প্রায় হাজারো মানুষ আসে। এ সময় আনন্দ বিনোদন তৈরি হয়। আমরা এই লাঠি খেলার আয়োজন প্রতিবছর করবো। এছাড়া এই দুইদিনব্যাপী আয়োজনে ২য় দিন বিবাহিত বনাম অবিবাহিত ফুটবল খেলা এবং মহিলাদের জন্য বালিশ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।