জাতীয়

‘রিমাল’ উপকূলজুড়ে রেখে গেছে শুধুই ক্ষতচিহ্ন

তাণ্ডব চালিয়ে উপকূল থেকে বিদায় নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। তবে রেখে গেছে ক্ষতের দাগ। তীব্র ঝড় সাথে ভারি বর্ষণ- নিঃস্ব করেছে লাখো মানুষকে। ঘরবাড়ি ও সহায়-সম্বল হারিয়ে দিগ্‌ভ্রান্ত উপকূলের মানুষ। এই ক্ষতি কাটিয়ে কীভাবে তারা পুনরায় নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়াবেন সেটি নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা তাদের।

সরকারি হিসাব মতে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে অন্তত ১৯ জেলার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জেলায় প্রাণ গেছে ১৪ জনের। আর রাজধানী ঢাকাতে রিমালের প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে আরও চারজন।

উপকূলে ‘রিমাল’-এর তাণ্ডবে হাজার হাজার বাড়িঘর ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। গ্রামীণ সড়ক এবং বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে ভাসছে শত শত গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। তলিয়ে গেছে মাঠের ফসল ও মাছের ঘের। উপকূলে বিদ্যুৎ নেই; নেই মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক। ঘরেও খাবার নেই অনেকের। এতে সবচেয়ে বেশি কষ্টে সময় পার করছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন তারা সেখানকার শুকনো খাবার খেয়েই টিকে আছেন। সব মিলিয়ে উপকূলে নেমে এসেছে মানবিক বিপর্যয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান সোমবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে জানান, এখন পর্যন্ত (সোমবার পর্যন্ত) খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৩৫ হাজার ৪শ’ ৮৩টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি। ঘূর্ণিঝড়ে ১৯ জেলার ১০৭ উপজেলায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলাগুলো হলো– সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। ১৫ জেলায় নগদ সহায়তার ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ টন চাল, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, গোখাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিতরণ লাইন লণ্ডভণ্ড হওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশের দুই কোটি ৭০ লাখ গ্রাহক। টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি বলছে, বিদ্যুৎ না থাকায় ৬৪ জেলার ২২ হাজার মোবাইল সাইট (টাওয়ার) অচল হয়ে পড়েছে, যা মোট সাইটের ৪৮ শতাংশের বেশি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker