আমরা কতজনই বা জানি রক্তের সচেতনতা। কিভাবে জানবো ভালো মন্দের উপকারিতা। আর সেই সকল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানাটা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ। তেমনই একজন নিঃস্বার্থভাবে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে উঠান-বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতার সেই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন রক্তযোদ্ধা বোরহান উদ্দিন (২২)।
বোরহান জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের রুদ্র বয়ড়া গ্রামের মো. ফরহাদ আলীর ছেলে। সে বর্তমানে ঢাকা ন্যাশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি গ্ৰামে এসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্ৰামীণ নারী-পুরুষদের সচেতন করতে উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের সামাজিক সচেতনতা, রক্তদানে সচেতন, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা, মাদকের কুফল এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছেন। পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের জন্য সন্তান প্রসবের পূর্বেই দুজন রক্তদাতা প্রস্তুত রাখা, সন্তান প্রসবের সময় রক্তের অভাবে অনাগত সন্তান এবং মাতৃমৃত্যুর প্রতিরোধে সচেতনতার বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। বৈঠকের মাধ্যমে ”মাদক ও বাল্যবিবাহ”কে’না বলি স্লোগানে উপস্থিত মানুষকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধও করান তিনি। মানবিক কার্যক্রমে বোরহানের পাশাপাশি যুক্ত আছেন উপজেলার অনেক তরুণ-তরুণী।
কাজটি সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে করে যাচ্ছেন তারা।
উঠান-বেঠকে সেবা গ্রহণ করা এমন অনেকেই বলেন, ‘উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মাদক বাল্যবিবাহ কুফল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাতে পেরেছি এবং সচেতন হচ্ছি। ছেলে-মেয়েদের বাল্যবিবাহ দেওয়া থেকে বিরত থাকবো। এছাড়া গর্ভবতী হলে করনীয় রক্তদাতা সংগ্রহ সহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনমুলক বার্তা সহজেই পাচ্ছি উঠান-বৈঠকের মাধ্যমে।
এ-বিষয়ে রক্তযোদ্ধা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি সুন্দর মানবিক বৈষম্যমুক্ত সচেতনতার সমাজ বিনির্মাণের। যে সমাজে সকল মানুষের অধিকার সমান থাকবে, ধনী গরীবের কোনো ব্যবধান থাকবে না। সবাই সচেতন হবে, মিলেমিশে সুন্দরভাবে সমাজে বসবাস করবে। সেই ভাবনা থেকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতন এবং সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সবাই সচেতন ও মানবিক হলে সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
উল্লেখ্য; বোরহান উদ্দিন এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ”ব্লাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটি” সংগঠনের ব্যানারে। উপজেলার ঢুরিয়ারভিটা, রামচন্দ্রখালী, পুঠিয়ারপাড়, বয়ড়া, কোরানিপাড়া ও রুদ্র বয়ড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে এই উঠান-বৈঠক পরিচালনা করেন। বর্তমানে এই সংগঠনটি সামাজিক কার্যক্রম ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন।