বিশ্ব

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : ২৪ ঘণ্টার উল্লেখযোগ্য খবর

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হামলা চালায়। এতে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়। এর পরই হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করে।

হামাসকে ধ্বংস করতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সেনা পাঠায় ইসরায়েল। হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

যুদ্ধের গত ২৪ ঘণ্টার পাঁচটি উল্লেখযোগ্য খবর :

১০ ঘণ্টার যুদ্ধ
ইসরায়েলি বাহিনী এবং হামাস যোদ্ধারা গাজায় বড় ধরনের লড়াই করেছে। ১০ ঘণ্টার যুদ্ধের পর ইসরায়েল হামাসের গুরুত্বপূর্ণ শক্ত ঘাঁটি দখলের দাবি করেছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, তারা মাটির ওপরে এবং হামাসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক—উভয় ক্ষেত্রে লড়াই করার পর জাবালিয়ায় সামরিক অবস্থান দখল করেছে। এ সময় কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। পাশাপাশি এ লড়াইয়ে ইসরায়েলের সেনাদের সামগ্রিক নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ হয়েছে।

সেনাবাহিনী আরো বলেছে, গাজার হাজার হাজার বাসিন্দা সহিংসতা থেকে বাঁচতে দক্ষিণে পালিয়েছে।

গত দিনে ৫০ হাজার মানুষ একাই সেখানে চলে গেছে।

ম্যাখোঁর যুদ্ধবিরতির আহ্বান
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। অবরুদ্ধ অঞ্চলের জন্য সহায়তার একটি সম্মেলন উদ্বোধনের সময় তিনি এ আহ্বান জানান।

ম্যাখোঁ প্যারিসে প্রতিনিধিদের বলেন, ‘অবিলম্বে আমাদের বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য কাজ করতে হবে। এর জন্য খুব দ্রুত একটি মানবিক বিরতি প্রয়োজন এবং আমাদের অবশ্যই যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করতে হবে।

তবে ইসরায়েল আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না এবং সব জিম্মিকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বানের বিরোধিতা করেছে।

ইসরায়েল মানবিক সংকট অস্বীকার করেছে
ইসরায়েলের একজন সামরিক কর্মকর্তা গাজায় মানবিক সংকটের কথা অস্বীকার করেছেন।

কর্নেল মোশে টেট্রো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জানি গাজা উপত্যকার বেসামরিক পরিস্থিতি সহজ নয়। তবে আমি বলতে পারি, গাজা উপত্যকায় কোনো মানবিক সংকট নেই।’ গাজায় বেসামরিক বিষয়গুলো পরিচালনাকারী ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংস্থা সিওজিএটির সমন্বয় ও লিয়াজোঁ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন টেট্রো।

টেট্রো বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় পানি, খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ এবং আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য মানবিক সহায়তার মতো খাতে ত্রাণ স্থানান্তরকে সহজতর করছে।

অন্যদিকে জাতিসংঘ ‘অপর্যাপ্ত’ অভিহিত করে বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে চিকিৎসা সহায়তার মাত্র দ্বিতীয় চালান আল-শিফা হাসপাতালে পৌঁছেছে।

এ ছাড়া ইতালি জানিয়েছে, তারা গাজাকে সহায়তার জন্য একটি হাসপাতালের জাহাজ ও ফিল্ড হাসপাতাল পাঠাচ্ছে। ‘ভলকানো’ জাহাজটি প্রাথমিকভাবে সাইপ্রাসের দিকে যাচ্ছে।

সীমান্ত ক্রসিং স্থগিত
মিসরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে বিদেশি ও আহত ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ স্থগিত রয়েছে। এটি গাজা থেকে একমাত্র প্রস্থান পয়েন্ট, যা ইসরেলের নিয়ন্ত্রিত নয়। ক্রসিং পুনরায় চালু করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রাশিয়ানদের সরিয়ে নিতে দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানোর পর মস্কো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বর্তমানে সাত হাজার জন রাফাহ হয়ে গাজা ত্যাগের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু সীমান্ত খোলা থাকার সময় প্রতিদিন মাত্র ৫০০-৬০০ জন পারাপার হয়েছে।

ফের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র মানবিক বিরতির বিনিময়ে ছয় মার্কিন নাগরিকসহ গাজায় এক ডজন জিম্মিকে মুক্তির জন্য আলোচনা চলছে বলে জানানোর পর তার এ মন্তব্য এসেছে।

এর আগে প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি সূত্র জানায়, জিম্মিদের মুক্তির জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় কাতার মধ্যস্থতা করছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker