জামালপুর
মেম্বর ছাড়েই না ‘ট্যাহা লাঘবই, পরে করর্য কইরা কার্ড ঠিক করার ট্যাহা দিছি বৃদ্ধা জমেলা বেওয়া
স্বপন মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি:
আমার কার্ডে টেহা-ত আগে আইছে, এহন বলে ট্যাহা আবো না। মালেক মেম্বর খবর পাঠাইছে আমার বয়স্ক কার্ড নষ্ট হয়ছে, ঠিক করতে হইবো, ঠিক করতে ট্যাহা লাগবো। আমি অসহায় হাত ভাঙা মানুষ চলাচল করতে পারি না, ট্যাহা পামু কই? কিন্তু মেম্বর ছাড়েই না ট্যাহা লাগবই, পরে এজনের কাছ ধার কইরা ১’হাজার ট্যাহা পাঠাই দিছি।
গত সোমবার দুপুরে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলা ডোয়াইল ইউনিয়নের চর হাটবাড়ী গ্রামে বৃদ্ধা জমেলা বেওয়া অশ্রুশীক্ত কন্ঠে এসব কথা গুলো জানালেন সংবাদকর্মীদের। তিনি আরো জানালেন ডোয়াইল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আব্দুল মালেক মেম্বার এমনটাই টাকার বিনিময়ে এমনটাই সেবা দিচ্ছেন অসহায় মানুষদের।
জানা যায়, জমেলার বেওয়ার নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড রয়েছে। সেই কার্ড যাছাইবাছাই করার জন্য সমাজসেবা অফিস থেকে নির্দেশনা এসেছে। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মালেক মেম্বারের বাড়িতে ছুটে যান জমেলা বেওয়া। গিয়ে শুনতে পারেন তার কার্ডটি নষ্ট হয়েছে, খাতা কলমে তার নাম নেই। পরে মালেক মেম্বার বলেন কাড ঠিক করতে হবে, ঠিক করতে টাকা লাগবে ১৫শত। পরর্বতীতে কোন রকম বলে কয়ে ১হাজার টাকা দিয়ে তিনি সেই কার্ড ঠিক করেন।
শুধু জমেলা বেওয়া নয় সরেজমিনে জানা যায় উপকারভোগী সাজেদা বেওয়া, ছেফাতন বেওয়া, এফাজ উদ্দিন, আবুল কাশেম, খোকন মিয়া, মনোয়ারা বেগম সহ অনেকেই এমন ভাবে টাকা দিয়ে তাদের বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড যাছাইবাছাই করেছেন। পরর্বতীতে সেই সব ভাতাভোগীরা জানতে পারেন কার্ড যাছাইবাছাইয়ে কোন টাকা লাগে না। মেম্বার মিথ্যা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব টাকা নিজের পকেটে তুলেছেন।
এ-ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। রাজনৈতিক ভাবে আমাকে হেয় করার জন্য উপকার ভোগীদের দিয়ে মিথ্যা কথা বলানো হয়ে।
এ বিষয়ে ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন বলেন, ‘কার্ড যাছাইবাছাই করণে কোন টাকা লাগে না। যদি কেউ টাকা লেনদেন করে থাকে, আর যদি সেটার কোন প্রমাণ বা সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ-ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্মকর্তা আরিফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমাজসেবা অফিসের কেউ এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়। কার্ড যাছাইবাছাইয়ে কোন টাকা নেওয়া হয় না।