জাতীয়

কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেল রিক্রুটিং এজেন্সি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুয়েতে পাঠানোর বিজ্ঞাপন দেখে একটি রিক্রুটিং এজেন্সিকে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন হবিগঞ্জের বাহুবল থানার মো. মোমেন রাজু। গত ১২ আগস্ট তাঁর কুয়েত যাওয়ার কথা। এর এক সপ্তাহ আগে রিক্রুটিং এজেন্সি অফিসে গিয়ে জানতে পারেন প্রতিষ্ঠানটির লোকজন টাকা নিয়ে পালিয়েছে।

শুধু মোমেন নন, তাঁর মতো আরো ৩৫ জনের কাছ থেকে রাজধানীর গুলশান এলাকার আল সাফার ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই এজেন্সির লোকজন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ৮ আগস্ট গুলশান থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী মোমেন রাজু কালের কণ্ঠকে বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আল সাফার ইন্টারন্যাশনালের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। বিজ্ঞাপনে বলা হয়, ভালো বেতনে তারা কুয়েতে লোক পাঠাচ্ছে। যোগাযোগ করলে এজেন্সিটি জানায়, কুয়েত যেতে মাথাপিছু তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।

পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতির আশায় তিনি ধারকর্জ করে তাদের সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন। ৬ আগস্ট কাগজপত্র আনতে এজেন্সির অফিসে গিয়ে দেখেন মানুষের ভিড়। পরে জানতে পারেন, জাল ভিসা দিয়ে তাঁর মতো আরো ৩৪ জনের কাছ থেকে কোটি টাকার বেশি নিয়ে পালিয়েছেন এজেন্সির মালিক শরিফুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন।

আরেক ভুক্তভোগী আদিল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মনির হাওলাদার নামের আরেক এজেন্সি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি।

তিনি জানান, সার্ভারে আমাদের প্রত্যেকের ভিসার নম্বর দিয়ে দেখেছেন, সব ভিসার নম্বরই ভুয়া।’

গুলশান থানার ওসি বি এম ফরমান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখনো তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আশা করি, খুব দ্রুত প্রতারকদের গ্রেপ্তার করতে পারব।’

জাল ভিসায় বিএমইটির ক্লিয়ারেন্স কার্ড

ভিসা জাল হলেও এই ভিসা নিয়ে ভুক্তভোগীরা তাঁদের জেলার বিএমইটি অফিসে ফিঙ্গার দিয়ে তিন দিনের ওরিয়েন্টেশন কোর্স করেন।

এই কোর্স করার পর তাঁদের প্রত্যেককে ক্লিয়ারেন্স কার্ড দেয় বিএমইটি।জানতে চাইলে বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফিঙ্গার দিতে বা ওরিয়েন্টেশন কোর্স করতে ভিসার কোনো প্রয়োজন হয় না। এটা যে কেউ করতে পারে। তবে ক্লিয়ারেন্স কার্ডগুলো আমাদের সার্ভারে পরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষা করার পর বোঝা যাবে এই কার্ডগুলো বিএমইটি দিয়েছে না জাল হয়েছে।’

অভিযোগ দিতে গিয়ে ভোগান্তি

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কাকরাইল মোড়ে অবস্থিত বিএমইটিতে অভিযোগ দিতে গেলে তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগী সুমন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা চারজন ৯ আগস্ট অভিযোগ দিতে বিএমইটি কার্যালয় গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কার কাছে যাব, এ ধরনের সহযোগিতাও কেউ করেনি। উল্টো সেখান থেকে দ্রুত চলে যাওয়ার কথা বলা হয়।’

তবে অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘কারা তাঁদের ঢুকতে দেয়নি তা তো আমি জানি না।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker