জাতীয়

পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা বায়েজিদের জামিন

পদ্মা সেতুর নাট খুলে ফেসবুকে ভিডিও দেয়া বায়েজিদ তালহা জামিন পেয়েছেন।

রোববার (২৫ জুন) আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগে বহাল রাখার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন।

এর আগে, বায়েজিদ তালহাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

পদ্মা সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলে নেয়ার অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুন ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে বায়েজিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় বায়েজিদসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা করা হয়।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ বায়েজিদ তালহাকে জামিন দেন। পরে এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ তালহাকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ জামিন বহালের আদেশ দেন।

গত ২৭ জুন পদ্মা সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলে নেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি বায়েজিদ তালহার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন শরীয়তপুরের আদালত। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

পদ্মা সেতু সাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দিনে (২৬ জুন) ৩৪ সেকেন্ডের একটি টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, বায়েজিদ তালহা সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি নাট খুলছেন। ভিডিও ধারণকারীকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।’

নাট হাতে নিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু, আমাদের … পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’

বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই বিকেলে তাকে রাজধানী থেকে আটক করে সিআইডি। তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

সেই সময় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে টিকটিক বানানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার সেই বায়েজিদ তালহার পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের তেলিখালী গ্রামের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ঘটনার সময় ঘরের মধ্যে থাকা বায়েজিদের ভাবি হাদিসা বেগম জানান, ৮-১০টি মোটরসাইকেলে ২০-২৫ জন লোক বাড়িতে ঢুকে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তারা রামদা, দা ও কুড়াল দিয়ে ঘরের টিনের বেড়া কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা ঘরের মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল তছনছ করে ফেলে। ঘটনার সময় হাদিসার স্বামী (বায়েজিদের মেজ ভাই) সোহাগ মৃধা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং হাদিসা ও তার শিশুকন্যা ঘরের মধ্যেই ছিল।

প্রতিবেশী জাহেদা আক্তার বলেন, ভাঙচুরের শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে এস দেখি ২০-২৫ জন লোক ভাঙচুর করছে। তাদের কাউকেই আমরা চিনি না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে ফোনে জানিয়েছেন এবং খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশকে ওই বাড়িতে পাঠানো হয়। তবে যেটুকু জানতে পেরেছি তাতে হামলাকারীরা এই এলাকার কেউ না।

এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনিরুজ্জামান জানান, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker