নওগাঁ

ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কৃষক, মহাদেবপুরে অবৈধ হাটে রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

নওগাঁর মহাদেবপুরে অবৈধ ঝালের হাট বসিয়ে সিন্ডিকেট করে প্রতিদিন লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কোটি টাকার ঝাল বেচাকেনা হলেও রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। ১৬ বছর ধরে চলছে এ হাট। কিন্তু কোনই আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কতৃপক্ষ।

প্রশাসন বলছে বিষয়টি তাদের জানা নেই।

উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিণ লক্ষিপুর এলাকায় লাগানো হয়েছে ঝালের পাইকারি হাট। প্রতিদিন এখান থেকে ট্রাকে ট্রাকে ঝাল ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে। আড়ৎদারদের বেঁধে দেয়া দামেই হাটে ঝাল বিক্রি করতে হচ্ছে চাষীদের। সিন্ডিকেটের কারণে নায্যমূল্য বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ১০ শতক জমির উপর হাটটি বসান। তখন সপ্তাহে একদিন বসতো। চার বছর থেকে বসছে প্রতিদিন। ঝালের অফ সিজনে হাট বন্ধ থাকে। ভরা মওসুমে প্রতিদিন ৫০- ৬০ মেট্রিকটন ঝাল বিক্রি হয়। বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করে ২৭ আড়ৎ সিন্ডিকেট। হাটে এখন পাইকারী ঝাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা দরে। আর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। প্রতিদিন সকালে আড়ৎদাররা ঝালের দাম ঘোষণা করে। সেই অনুযায়ী একই দামে ঝাল কেনে তারা।

হাটে গিয়ে দেখা যায়, জমজমাট চলছে বেচাকেনা ঝাল বিক্রি করতে আসা মোকলেছার রহমান জানান, ১৯ কেজি ঝাল হাটে এনেছেন। বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৫৭ টাকা দরে। আড়ৎদার ধলতা হিসেবে এক কেজি ঝাল বিনা পয়সায় নিয়েছেন। ঝালচাষী জাহিদ হাসানও জানালেন একই কথা। হাটে টিনের ছাউনি দেয়া শেডে ঝাল কিনছিলেন আড়ৎদার আলমগীর হোসেন। এদিন তিনি দুই হাজার ৯৬৪ কেজি ঝাল কিনেছেন বলে জানান। তারা রয়েছেন মোট ২৭ জন। নওগাঁ আড়তের পাইকারদের কাছ থেকে শুনে তারা ঝালের দিনের দাম নির্ধারণ করেন। আলমগীর ঝাল দেন নওগাঁ আড়তের পাইকার সোহেল রানার কাছে। তার বেধে দেয়া দামে ঝাল কিনেন তিনি। এছাড়া অন্যরা ঢাকা, চট্রগ্রামের আড়ৎদারদের বেধে দেয়া দামে ঝাল কিনেন। হাটের উন্নয়নের জন্যও টনপ্রতি নেয়া হয় ১০০ টাকা।

একই কথা জানালেন কুতুবুল আলম, দুলাল হোসেন, সেফাতুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন আড়ৎদার। সফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম বাচ্চু বলেন, হাটটি থেকে সরকার ও ইউনিয়ন পরিষদ কোন রাজস্ব পায়না। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ঝালের আবাদ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ঝালের হাটের বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তিনি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker