২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমান। এরপর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২৪ আগস্ট তিনি সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
আজ ২৪ আগস্ট আইভী রহমানের ১৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী। আইভি রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তাঁর পরিবারের লোকজন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
সূত্রমতে জানতে পারি, ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: সায়দুল্লাহ মিয়া মত প্রকাশ করেন, মৃত্যু বার্ষিকীর দিনটি করোনা মহামারিতে হওয়ায় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
দিনের কর্মসূচির মধ্যে সকাল ৬ টায় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, সকাল ৯টায় নেত্রীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ।আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সকল শহীদানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল। বাদ জোহর মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত প্রার্থনা।বিকালে শোক সভা এবং মরহুমার নিজ বাড়ি আইভি ভবনে দিনব্যাপী কোরআন খতম অনুষ্ঠান।
অন্যদিকে মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দোয়া ও স্মরণ সভার আয়োজন করেছে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ।আইভি রহমান ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরবের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মো. জিল্লুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।নারী নেত্রী আইভি রহমানের একমাত্র ছেলে আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি।
ছাত্রজীবনে তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শোষিত বাংলা ও বাঙ্গালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি তখন ছাত্রলীগের ১ম সারির নেত্রী এবং নীতিনির্ধারক।তিনি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে বাঙ্গালির স্বাধীকার আদায়ের লক্ষ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি ও তার স্বামী জিল্লুর রহমান ভারত গিয়ে সশস্ত্র ট্রেনিং নেন।
১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।
এর আগে আইভি রহমান মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। রাজনীতি ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মহিলা সমিতির সভানেত্রী ও জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মহিলা সংস্থা এবং জাতীয় মহিলা সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন। নারীর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ও সমাজের অবহেলিত শিশু, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে তার উজ্জল ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।কিশোর গঞ্জের বরেন্য ব্যাক্তিবর্গের মাঝে
শহিদ আইভি রহমান অন্যতম।মন মসজিদ বা মন্দিরে অনন্তকাল শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে কিশোর গঞ্জবাসী।মানবতার মহা মান দন্ডে।