ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় ফসলের মাঠের চিত্র। এর ধারাবাহিকতায় এক সময়ের সবুজ মাঠ হয়ে উঠে হলুদের সমারোহ। এবারের শীতের মৌসুমে সরিষা ফুলের নয়াভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার চরাঞ্চলের ফসল মাঠের চেহারা। চারদিকে এখন হলুদ সরিষা ফুলে সমারোহ। বিস্তীর্ণ হলুদের মাঠে সরিষা ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মধু সংগ্রহে ছুটাছুটি করছে মৌমাছির দল। সামান্য পরিচর্যায় আর ‘অল্প খরচে’ লাভের আশায় সরিষা চাষ শুরু করেছেন এই উপজেলার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সরিষা চাষে ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরিষাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা। এর মধ্যে পোগলদিঘা, কামরাবাদ, সাতপোয়া, আওনা, পিংনা, ভাটারা, মহাদান ও ডোয়াইল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এবছর ৪’হাজার ২শত ৫০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ৩’হাজার ৭শত ৫০হেক্টর জমিতে ধরা হয়েছিলো। এসব জমিতে প্রায় ১হাজার ৫০টি মধু সংগ্রহের বক্স স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রয়োজনীয় খাঁটি মধু সংগ্রহ করতে পারবে।
এবছরে সরকারি প্রণোদনায় ৬’হাজার ৯শত জন সাধারন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বারি-১৪, বারি-৪, বারি-১৭, বারি-১৯ এর মত উন্নত জাতের সরিষার বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘জমি ফাঁকা রেখে লাভ কি। ধান কাটা শেষ করেই সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘাতে খরচ হয় ৩হাজার টাকার মত। সরিষা বিক্রয় করা যায় ১০থেকে ১২’হাজার টাকা। এবার কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্য বীজ পেয়েছেন। সেই বীজ দিয়ে ৩’বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
কৃষক ইব্রাহীম, রফিকুল ইসলাম, সুলতান আহমেদ মত অনেকই বলেন, ধান কাটার পরে জমি খালি থাকে সেই সুযোগে তারা সরিষার বীজ লাগান। খরচ কম সবাই কম বেশি আগ্রহ করে সরিষা চাষ করে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার ফলন ভালো হবেই।
এ-বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার। সাধারন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষার বীজ দিয়েছেন। এবছরে সরিষা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩হাজার ৭শত ৫০হেক্টর জমি। সেখানে ৪হাজার ২শত ৫০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। ক্রমেই সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন।