এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ হওয়ার পর ইচ্ছে ছিলো বাবার সাথে পরীক্ষার কেন্দ্রে যাবে ও বাড়ি ফিরবে সানজিদা আক্তার। অন্যান্য পরীক্ষার্থী বাবা-মার সাথে পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলেও সানজিদার সেই সৌভাগ্য হয়নি।কারণ তার বাবা শামীম আল মামুন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস রোববার সকালে স্বজনেরা যখন তার বাবার লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো, ঠিক সেই সময় বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিতে যায় সানজিদ। সে শহরের সরকারি শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে কান্নায় ভেঙে পরে সানজিদা।তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
সানজিদা আক্তার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাইমাইল গ্রামের শামীম আল মামুনের মেয়ে ও টাঙ্গাইল শহরের সরকারি কুমুদিনী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার বাবা ওই গ্রামের মৃত ছোরহাব হোসেনের ছেলে।তিনি পেশায় ছিলেন দলিল লেখক। সানজিদা দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ছোট।
তার বড় ভাই ইমরান হোসেন জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর তার বাবা শামীম আল মানুষ পাকস্থলীর সমস্যা নিয়ে টাঙ্গাইল শহরের একটি ক্লিনিকে চার দিন চিকিৎসা নেন। পরবর্তীতে কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়ায় তাকে ঢাকার ইবনে সিনা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার অপারেশন করা হলেও তার আর জ্ঞান ফিরেনি। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তিনি মারা যান।
রোববার সকালে বাইমাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। জানাযায় দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হেলাফ ফকিরসহ পাঁচ শতাধিক মানুষ অংয় নেয়।
সানজিদা আক্তার বলেন, আমি বাবাকে খুব সম্মান ও ভালবাসতাম। তাই তার নির্দেশনা মোতাবেক মনোযোগ দিয়ে লেখা পড়া করতাম। আমার বাবার জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।
দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু বলেন, বষয়টি খুব হৃদয় বিদারক। একদিকে বাবা হারানোর শোক অন্য দিকে পরীক্ষা। সানজিদার বাবার আত্মার মাগফেরাত ও সানজিদার জন্য দোয়া রইলো।