জাতীয়

মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে নগরবাসীর মিশ্র প্রতিক্রিয়া

আসছে বিজয় দিবস থেকে ঘুরবে মেট্রোরেলের চাকা। তবে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই গণপরিবহনের জন্য ভাড়া ঠিক করা হয়েছে, তাতে মোটেও খুশি নন নগরবাসী।

তাদের সোজা কথা, যে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে, তাতে মেট্রোরেল গণমানুষের হয়ে উঠবে কিনা, তা নিয়ে অনেক সন্দেহের অবকাশ আছে।

আবার, কেউ বলছেন কম দূরত্বের যে ভাড়া ঠিক করা হয়েছে সেটিও বেশি। এতে কম দূরত্বের যাত্রীরা মেট্রোরেলে ভ্রমণ করবেন না।

কর্তৃপক্ষ বলছে, স্মার্ট কার্ডে ভাড়া শোধ করলে ১০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। তাতেও যে ভাড়া দাঁড়াবে সেটিকেও বেশি বলছেন নগরবাসী।

উত্তরা আজমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দিয়াবাড়ির মেট্রোরেল স্টেশনের। দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। অর্থাৎ উত্তরা থেকে মেট্রোরেল স্টেশনে যেতে বাহন ভেদে খরচ হবে ১৫-৫০ টাকা খরচ।

এরপর একজন যাত্রী মেট্রোরেলে উঠে তার গন্তব্যে যেতে পারবেন। এই বাহনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, যানজট ছাড়াই অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌছাতে পারবে নগরবাসী।

কিন্তু ভাড়ার অঙ্কটা কেমন হলো? বেশিরভাগ নগরবাসী মনে করেন, নূন্যতম ভাড়াই অনেক বেশি, আবার সর্বোচ্চ ১০০ টাকাও অনেক বেশি।

কিন্তু, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা অন্যান্য গণপরিবহণের ভাড়ার সঙ্গে তুলনা করলে মেট্রোরেলের ভাড়া খুব একটা বেশি নয়।

উত্তরা থেকে এসি বাসে মতিঝিল যেতে খরচ ১২০ টাকা। নন-এসি বাসে ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা। আর মেট্রোরেলে ১০০ টাকা। যা মেট্রোরেলের সুবিধার চাইতে বেশি বলেই ধরছে অনেকে।

তবে স্বল্প দূরত্বের ভাড়াটা বেশি। সর্বনিম্ন ভাড়া ২০টা। অর্থাৎ মিরপুর ১০ থেকে কাজীপাড়া যেতে লাগবে ২০টা। একইভাবে কাজীপাড়া থেকে শেওড়াপাড়া যেতেও লাগবে ২০ টাকা।

আবার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকা। ভারতের নয়াদিল্লির মেট্রোতে একই দূরত্বের ভাড়া ৪০ রুপি। বাংলাদেশি টাকায় তা ৫০ টাকারও কম।

এক নগরবাসী জানালেন, এখন উত্তরা ও মিরপুর থেকে আগারগাঁও হয়ে যেসব যাত্রী চলাচল করে, তাঁদের জন্য মেট্রোরেল সাশ্রয়ী-আরামদায়ক বাহন হবে।

তবে তিনি মনে করেন স্বল্প দূরত্ব বা নূন্যতম ২০ টাকা ভাড়া বাসে চড়া নাগরিকদের জন্য ব্যয় বাড়াবে। একটা বড় সংখ্যক যাত্রী মেট্রোরেলবিমুখ হতে পারে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, আধুনিক এই গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে সরকার বিপুল বিনিয়োগ করেছে। মেট্রোরেলের পরিচালনা ব্যয়ও বেশি। তাই ভাড়া বেশি হয়নি।

আবার মেট্রোরেল আইনে বলা আছে, পরিচালনা ব্যয় ও মানুষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় ভাড়া ঠিক হবে। ফলে এই ভাড়া সমন্বয়ের করার সুযোগ আছে।

ডিটিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন আরও জানান, সেই সাথে যারা স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া দেবেন তারা ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন।

ভাড়া কমিয়ে যাত্রীদের মেট্রোরেলের প্রতি আগ্রহী করা গেলে দ্রুতই এর খরচ তুলে নেয়া সম্ভব বলেও মনে করেন নগরবাসী।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে। একটা হলো স্থায়ী কার্ড। এই কার্ড রিচার্জ করে পুরো বছর বা মাসে যাতায়াত করা যাবে।

কার্ড কিনতে ২০০ টাকা দিতে হবে। এরপর ২০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে। অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে কার্ড রিচার্জ করা যাবে।

মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। আরেকটি কার্ড সাময়িক, যা প্রতি যাত্রায় দেয়া হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এই কার্ড নিতে হবে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker