বিনোদন

‘হাওয়া’ নিয়ে মামলা করা ঠিক হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

মুক্তির পর থেকেই ‘হাওয়া’ সিনেমা এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সুপার থেকে বাম্পারহিট। এমন সময়ই সিনেমাটির বিরুদ্ধে বনপ্রাণী আইনে মামলা। যাকে মুক্ত চিন্তার বাধা হিসাবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অনেক দিন থেকেই সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে ‘শনিবার বিকেল’ নামের চলচ্চিত্রটি। হলি আর্টিজান হামলার উপর নির্মিত ছবিটির মুক্তির জন্য লড়ে যাচ্ছেন পরিচালক।

চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক প্রবাহ, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা এবং সরকারি অনুদানসহ সংশ্লিষ্ট নানা প্রসঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর বৈঠকে কথা হয়েছে এই দুই ছবি নিয়েও।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, শিল্পী ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তথ্যমন্ত্রী ড: হাছান মাহমুদ।

‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে সরাসরি আদালতে গিয়ে মামলা করা সমীচীন হয়নি বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আইনের ব্যত্যয় হলে পরিচালককে নোটিশ করা যেতো।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা আবার দর্শকদের হলে ফিরিয়ে এনেছে। সেই সিনেমাগুলোর একটি ‘হাওয়া’। এর পরিচালকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

জানার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলি, সেই মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তা মামলা করেছে তাকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়েছে।

আইনের যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে পরিচালককে নোটিশ করতে পারতো। সরাসরি কোর্টে গিয়ে মামলা করা সমীচীন হয়নি বলে আমি মনে করি বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

‘শনিবারের বিকেল’ সিনেমাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে যে হামলা হয়েছিল, সেই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে এই সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সেখানে দু’জন পুলিশ অফিসার মারা গেছেন এবং আমাদের পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে জঙ্গিদের দমন করেছিল।

সেন্সর বোর্ডের অভিমত, সেই বিষয়গুলো সিনেমাটিতে আসেনি। সেজন্য এই দৃশ্যগুলো সংযোজন করতে বলা হয়েছে। সেটি তারা কিছুটা করেছে, কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়।

আপিল কর্তৃপক্ষ সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেবে কী কী সংযোজন করা প্রয়োজন। সেগুলো সংযোজন হলে সিনেমা রিলিজের ক্ষেত্রে সমস্যা কেটে যাবে।

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ওটিটি একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক প্ল্যাটফর্ম এবং বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা। আমরা এটিকে প্রমোট করতে চাই।

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এত বিস্তৃত, এত ব্যাপকভাবে ক্রমবর্ধমান যে, এটিকে সেন্সর করা সম্ভব নয়। সেজন্য এটি একটি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করেন তাদের দিয়েই মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করে দিয়েছে, সেই কমিটি কাজ করছে এবং সেই কমিটি সমস্ত অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে তারা এই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে।

আমরা এমন একটি নীতিমালা করতে চাই, যে নীতিমালা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং একই সঙ্গে আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করবে।

অনুদান নিয়ে মাহমুদ বলেন, সিনেমা শিল্প নানা সংকটের মধ্য দিয়ে এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দিয়েছি কারণ সিনেমা বানিয়ে আগে পয়সা উঠতো না, এখন উঠবে।

এখন আবার দর্শক ফিরে আসছে, সিনেমা হল বাড়ছে। একই সাথে আর্টফিল্মে অনুদান দেয়া প্রয়োজন। আর্টফিল্ম ব্যবসা করতে পারে না কিন্তু আর্টফিল্মের প্রয়োজন আছে।

সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সরকারের হাজার কোটি টাকা ঋণ তহবিলের কথা পুণর্ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র ইতোমধ্যেই বিশ্ব অঙ্গনে কিছুটা জায়গা করে নিয়েছে।

বৈঠকে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মোরশেদুল ইসলাম, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, এস এ হক অলীক, আফসানা মিমি, চঞ্চল চৌধুরী, মেজবাউর রহমান সুমন, সৈয়দ গাউসুল আলমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker