ঢাকা

সানজানার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজানা মুসাদ্দিকার মৃত্যুর ঘটনায় তার মা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বাবা শাহীন আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

এদিকে, সানজানার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কথা বলতে রাজি না হলেও পুলিশের দাবি এটি আত্মহত্যা।

রাজধানীর দক্ষিণখানের মোল্লারটেক এলাকার একটি ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান বেসরকারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সানজানা (২১)।

রোববার (২৮ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা এক মানববন্ধনে সানজানাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তার বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। বলছে, সানজানা আত্মহত্যা নয় হত্যাকাণ্ডের শিকার।

শনিবার বেলা ১২টা ২১ মিনিট পর্যন্তও ব্র্যাকেরই আরেক বড় আপুর সাথে হোয়াটসঅ্যাপে গল্প করছিলো সানজানা।

আর তাকে আহত অবস্থায় প্রথমে নিয়ে যাওয়া উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নথি বলছে প্রবেশের সময় ছিল দুপুর ১টা ১৯ মিনিট।

অর্থাৎ এই এক ঘণ্টার মধ্যেই কোন এক সময় তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। শরীরে ছিলো বেশ কিছু আঘাতের দাগ।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার দিন সকালেই তার বাবা তাদের হাজি ক্যাম্পের ফ্লাটে ঢুকে মাসহ সানজানাকে মারধর করেছিল।

এরপর মা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে সেখান থেকে মেয়েতে হাসপাতালে নেওয়ার খবর পায় বলে একাত্তর টেলিভিশনকে জানিয়েছেন সানজানার মামা।

সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতে এটি কোনভাবেই আত্মহত্যা না, হত্যা। বাবার বিচার দাবি করে মানববন্ধনে তারা জানায় এমন ভয়াবহ নির্যাতন আগেও সয়েছে সানজানা।

এ ঘটনায় মা বাদি হয়ে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাবা শাহীন আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ বলছে, বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পর সাংসারিক অশান্তি ও নির্যাতন নিয়ে কয়েক দফা পুলিশের কাছে গিয়েছিল মা মেয়ে। চিরকুটেও অভিযুক্ত করে তার বাবার নাম লিখে গিয়েছিল।

দক্ষিণখান থানার ওসি মামুনুর রশীদ বলেন, কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি কাছ থেকে ছাদের চাবি নিয়ে ওই ছাত্রী তাদের ১০তলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন।

তিনি জানান, মৃত শিক্ষার্থীর বাবা শাহীন আলম পাঁচ বছর আগে তাদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ক’দিন আগে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাননি হলে দুই পরিবারের মধ্যে টানাটানি চলে।

এরপর সানজানার মা দুই মাস আগে তার বাবাকে ডিভোর্স দেন। এজন্য তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচাদি দিতেন না বলে জানা গেছে।

এদিকে, রোববার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সানজানার মরদেহের ময়নাতদন্ত হলেও এনিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker