টাঙ্গাইল

বড় বোনের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ছোট বোনকে অপহরণ

বড় বোনের সাথে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ছোট বোনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করায় সায়ের আলম পাভেলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) রাতে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকা থেকে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধারসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অপর দুজন হলেন শেখ আলমগীর (২৩) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)।

পুরো ঘটনা নিয়ে পরের দিন শুক্রবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

তিনি জানান, পাভেল নিজেকে কখনো বিবিএ, এমবিএ, ডিগ্রিধারী হিসাবে। কখনও কখনও নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেটের ছেলে দাবি করতেন। আসলে সে রং মিস্ত্রির কাজ করত।

এসব পরিচয়ে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার এক তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। বিয়ের প্রস্তাবও দেন তার পরিবারকে। কিন্তু ওই তরুণী ও তার পরিবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পাভেল। পছন্দের পাত্রী ও তার পরিবারের প্রত্যাখ্যানের প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সখ্য গড়ে তোলেন তরুণীর ছোট বোনের সঙ্গে।

সুযোগ বুঝে লন্ডনে বসবাসরত নিজের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে (কথিত) বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ছোট বোনকে অপহরণ করে রুবেল ও তার দলবল।

পুলিশকে বিষয়টি জানালে মেয়েকে চিরতরে গুম করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। কিন্তু সাহস করে ভুক্তভোগীর বাবা বৃহস্পতিবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, আয়েশার মেজো বোনের সঙ্গে পাভেল প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অপহরণ করে আয়েশাকে। এসময় আয়েশাকে পাভেলের প্রবাসী ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখায়।

তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে যায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় পাভেলসহ তিনজনকে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দু’বছর ধরে ভুক্তভোগী ও তার বোনের সঙ্গে পাভেলের যোগাযোগ ছিল। তাদের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখাও করতেন তিনি।

কিশোরীকে অপহরণের পর টাঙ্গাইল নিয়ে জাহাঙ্গীরের বাসায় রাখেন। গ্রেফতার জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে এর আগেও দুটি মামলা রয়েছে।

তিনি জানান, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে রংমিস্ত্রির কাজের সুবাদে আলমগীরের সঙ্গে পাভেলের পরিচয় হয়। আলমগীরের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর বড় বোনের সঙ্গে পরিচিত হন পাভেল।

এরপর তিনি কিশোরীর বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তরুণীর বাবা-মাকেও বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হন। পরবর্তীতে ওই তরুণীর বিয়ে হয়ে যায়।

এ থেকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে পাভেল তরুণীর ছোট বোনকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। তার সঙ্গে যোগাযোগও ছিল পাভেলের।

অপহরণের পর টাঙ্গাইল গেলে জাহাঙ্গীর কিশোরীর বাবাকে মুক্তিপণের জন্য ফোন দেন। পুলিশ ধারণা করছে, গ্রেফতাররা নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য।

ডিসি বলেন, ক্ষোভ থেকে কিশোরীকে অপহরণের পর পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল পাভেলের। আমরা ধারণা করছি, পাভেলসহ অন্যরা নারী পাচারকারী চক্রের সদস্য। নানা কৌশলে মেয়েদের অপহরণ করে থাকেন তারা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker