বন্যার কবলে দেশের কয়েকটি জেলায় প্লাবিত হলেও কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে নদ-নদী,খাল-বিলে তেমন পানি দেখা যায়নি। গত কয়েকদিনে তীব্র তাপদাহে নদ-নদীর পানি শুকিয়ে নদীর তলায় অবস্থান করছে। খাল বিল শুকিয়ে যেন হয়েছে মরুভূমি। ক্ষেত-খলা ফেটে হয়েছে চৌচির। সে কারণে আমন আবাদ ও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন স্থানীয় চাষিরা। বাজারে পাটের দাম ব্যাপক থাকায় এই বছর উপজেলায় পাটের আবাদ অধিক হয়েছিল। কিন্তু পানির অভাবে উপযুক্ত সময়ে পাট কাটতে না পারায়, খেতেই পাট শুকিয়ে যাওয়াতে ফলন হ্রাসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় পাট চাষিরা।
ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানির অভাবে বিপাকে পড়েছে উপজেলার পাট চাষিরা। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ না দিতে পারায় একদিকে যেমন মাঠের পাট কাটতে পারছে না, অন্যদিকে পাট না কাটার ফলে সেসব জমি খালি করে আমন ধানের জমি তৈরি করতে পারছে না। এতে সময় মত পাট জাগ দিতে না পারলে পাটের ন্যায্যমূল্য এবং সময়মত ধান রোপন করতে না পারলেও ধানের উৎপাদন কমে যাওয়াসহ কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ২ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে । গেল বছর পাটের চাষ করা হয় ২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটিহারী গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন (৫০) বলেন, ‘পানির অভাবে পাট পঁচাতে না পেরে জটিল সমস্যায় পড়েছি। অতিরিক্ত পরিবহন খরচ করে অনেকে ১-২ কিলোমিটার দূরে নদীতে পাট পঁচাচ্ছেন। আশপাশের খাল-বিলে পানি নেই। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। অর্ধেক জমির পাট কেটে ফেলে রেখেছি।’
একই এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম (৪৮) বলেন, ‘পাট চাষ করতে নানান জটিলতার পড়তে হয়। তারপরও পাট চাষ করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া না গেলে কষ্ট বেড়ে যায়। এ সব কারণে দিন দিন পাটের চাষ কমে যাচ্ছে।
উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের চরবিশ্বনাথপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রহিম মিয়া জানান, পাট কেটে একটি ডোবায় জাগ দিয়েছিলাম, তখন পানি ছিল এক হাটু ভাবছিলাম বৃষ্টি হয়ে পানি বেশি হবে। কিন্তু বৃষ্টি না আসায় তার পাটের জাগ শুকনায় পড়ছে।
চর হাজিপুর কৃষক সুরুজ আলী জানান, ক্ষেতের পাট মরে যাচ্ছে, কিন্তু পানির অভাবে পাট কাটতে পারছিনা আল্লাহ বৃষ্টি না দিলে ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই মরে যাবে।
চর হাজিপুর কৃষক সুরুজ আলী জানান, ক্ষেতের পাট মরে যাচ্ছে, কিন্তু পানির অভাবে পাট কাটতে পারছিনা আল্লাহ বৃষ্টি না দিলে ক্ষেতের পাট ক্ষেতেই মরে যাবে।
উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী জাহিদ হাসান রণি বলেন, ‘অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকরা পাট পঁচাতে পারছেন না’। রিবন রোটিং’ পদ্ধতিতে পাট পঁচানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উন্নতজাতের পাট চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। এ জন্য আমরা বিভিন্নস্থানে কৃষকের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লট তৈরি করেছি।