কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের শিশু আফফান ৬ মাসে হাফেজ

ছয় মাসে পুরো কোরআন মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে মো: আফ্ফান মিয়া(৯) নামের এক শিশু। তার বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ শাহেদল গ্রামে। সে মাহতাব উদ্দিন (স্বপন) এর মেজো ছেলে।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর আল-জামিয়াতুল কাদিরিয়া ও শাহেদল এতিমখানা মাদ্রাসা থেকে সে হাফেজ হয়েছে। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক রিয়াদের করা এক প্রতিবেদনে উঠে আসে প্রথমে আফফানের কৃতিত্বের গল্প। বিভিন্ন মিডিয়ায় আফফানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। রিয়াদের মতে আফফানের মত পবিত্র কোরআনের হাফেজরা আমাদের আইকন। একজন কোরআনের হাফেজ উচ্চ মর্যাদাশীল মানুষ।

আসুন জানি হাফেজ কি? এর মর্যাদা কি? রাতের আরামের ঘুমকে হারাম করে দিনকে দিন রাতকে রাত মনে না করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে পবিত্র কোরআনের ত্রিশটি পাড়া অন্তরে ধরে রেখেছেন। তারা পবিত্র কোরআনের হাফেজ এবং মহান আল্লাহ তয়ালার প্রিয় বন্ধু। তাদের সাথে কোন অবস্থাতে শত্রুতা পোষণ করা ঠিক নহে। সব সময় তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা রাখা উচিত।

রাসুল (স:) বলেন, হাফেজে কোরআন মহান আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বন্ধু। যে তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে আল্লাহ তার সাথে শত্রুতা পোষণ করবে, আর যে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা রাখবে আল্লাহ তাদের সাথে ঘনিষ্টতা রাখবে। (জামে সগীর)

পৃথিবীতে অন্য কোন ধর্ম গ্রন্থ কেউ মুখস্ত করতে সক্ষম হয়নি এবং হবে না। কিন্তু অসংখ্য মানুষ রয়েছে যাদের অন্তরে পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন বিদ্যমান রয়েছে। অন্তরে বিদ্যমান রত হাফেজের জন্য আল্লাহ জান্নাতে বিশেষ স্থান নির্ধারন করে রেখে দিয়েছেন।

আফফানের বাবা স্বপন মিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বড় ছেলেকে কোরআনে হাফেজ করতে অনেক চেষ্টা করছিলাম। তাকে না করতে পেরে আমার খুবই জেদ ছিলো মেজো ছেলেকে হেফজ পড়াবো। পরম করুণাময় আমার এ ইচ্ছা পূরণ করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিন ও শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করে সকলের কাছে দোয়া চাই।

আফফানের শিক্ষক হাফেজ দিদারুল ইসলাম জানান, ৮ বছর বয়সে নুরানিতে ভর্তি হয়ে নুরানি পড়ার পর ৩ মাস নাজেরা পড়ে (কোরআন দেখে পড়া) হেফজ ছবক নেওয়ার পর ৬ মাসে প্রতি দিন ৫/৬পৃষ্টা করে মুখস্থ করে ছবক দিত সে। এমন নজিরে পুরো শিক্ষক হতভাগ হয়ে যেত। এভাবে মাত্র ছয় মাসে পুরো কোরআন মুখস্থ করে ফেলে আফ্ফান। এখন সে প্রতিদিন সকালে আধা প্যারা, বিকালে আধা প্যারা করে মোট এক প্যারা করে আমাকে কোরআন মুখস্থ পড়ে শোনায়।

ওই মাদ্রাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) হাফেজ মাওলানা মুফতি আবুল কাশেম বলেন, এমন নজির খুবই কম। আফ্ফানের মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে এটা সম্ভব করেছে। যেখানে স্বাভাবিকভাবে অন্যদের ৩ /৪ বছর বা কোন কোন ক্ষেত্রে আরো বেশি সময় লেগে যায় সেখানে আফ্ফান মাত্র ৬ মাসে পুরো কোরআন মুখস্থ করেছে।

বড় হয়ে আন্তর্জাতিক দেশ বরেণ্য আলেম হতে চায় আফফান। সে তার নিজের,তার পরিবারের ও ওস্তাদদের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker