টাঙ্গাইলে সৃষ্টি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির আবাসিক ছাত্র শিহাব মিয়াকে (১০) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শিহাব টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের একমাত্র ছেলে।
এ ঘটনায় রোববার বিকেলে র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অধ্যক্ষসহ ৯ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব কমান্ডার এএসপি এরশাদুর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব ৭ শিক্ষককে ও সদর থানার পুলিশ দুই শিক্ষককে নিয়ে গেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যার দিকে শহরের বিশ্বাস বেতকা সুপারী বাগান এলাকায় সৃষ্টি অ্যাকাডেমিক স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে শিহাবের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান শিক্ষকরা। তখন শিক্ষকেরা দাবি করেছিলেন, শিহাব আত্মহত্যা করেছে। তবে শিক্ষকদের দাবি তখনই নাকচ করেছিল শিহাবের পরিবার।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, সন্ধ্যায় শিহাবের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। রিপোর্টে ডাক্তার মতামত দিয়েছেন, শিহাবকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে কারা, কেন তাকে হত্যা করেছে তদন্ত করে অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। আইন অনুযায়ী এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় সৃষ্টি স্কুলের দু’জন শিক্ষক আবুবকর ও নাসিরকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে স্কুলের ভাইস- প্রিন্সিপাল আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, শিহাব বাথরুমের ঝর্ণার সাথে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। স্কুলের আবাসিকের বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় শিহাবকে দেখার পর সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
জানাগেছে, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আরএমওসহ তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিক্যাল বোর্ড শিহাবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গামছা জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া শরীরের অন্য কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
শিহাবের বাবা ইলিয়াস হোসেন জানান, আমি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট শুনেছি। পুলিশ ফোন করে জানিয়েছে। এখন পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে হত্যা মামলা করব। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমি কখনো ভাবিনি আমার সাথে এমন হবে। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।