জাতীয়

আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের পাশে আছে

বাংলাদেশের মানুষকে সব সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই চলতে হয়েছে এবং হবে। সে কথা মাথায় রেখেই অঞ্চলভিত্তিক অবকাঠামোগুলো তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বন্যা আসায় ঘাবড়ানোর কিছু নেই। বন্যা মোকাবেলায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

সিলেট সার্কিট হাউসে গতকাল মঙ্গলবার সিলেট বিভাগের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন বিষয়ে মতবিনিময়সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী সিলেট যাওয়ার পথে হেলিকপ্টারে খুব নিচ দিয়ে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন।

যেকোনো দুর্যোগে আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের পাশে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘সরকার বা বিরোধী দল, যেখানেই আওয়ামী লীগ থাকুক না কেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সর্বদা সারা দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের জন্য কাজ করেছেন। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা অন্য যেকোনো দুর্যোগে আমরা সব সময় মানুষের পাশে থাকি এবং মানুষকে আমাদের সহায়তা অব্যাহত রাখব। ’

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কারণ তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধারে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে যান, যেখানে অনেকেই পৌঁছতে পারেননি এবং ওই এলাকার ছবি তাঁকে পাঠিয়েছেন, যা উদ্ধারপ্রক্রিয়া সহজ করেছে। ‘সেই ছবি আমি সেনাপ্রধান, আমাদের অফিস, বিভাগীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। তারা মানুষকে উদ্ধার করতে পেরেছে,’ বলেন তিনি।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও সিলেট সেনানিবাসের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং বন্যা ও এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে, বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন।

১৯৯৮ সালের বন্যার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা সহজে এসব খাবার কয়েক দিন সংরক্ষণে রেখে খেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের মতো হাওর এলাকায় রাস্তার মাটি ভরাটের পরিবর্তে উঁচু রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে এ ধরনের দুর্যোগের সময় গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা যায়।

কুশিয়ারা নদীর ড্রেজিং ও নাব্যতা বৃদ্ধি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষায় তিনি একবারের জন্য ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পক্ষে, কিন্তু নদীর নাব্যতা নিশ্চিত করতে বছর বছর সেখানে রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং করতে হবে।

বন্যার সময় খাদ্যের গুদামে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে এবং খাদ্য ভাণ্ডার থেকে যাতে সহজে পরিবহন করা যায়, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

পানি নামতে শুরু করলে ডায়রিয়া ও জ্বরের মতো সংক্রামক রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সিলেট অঞ্চলের পুরো বন্যাকবলিত এলাকা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি।

দেশের মাঝামাঝি অংশে শ্রাবণ মাসে বন্যা হতে পারে এবং দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসে বন্যা হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুরো সিলেট অঞ্চল পর পর তিনবার বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। এই বন্যাই শেষ নয়। কাজেই বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। ’ তিনি বন্যার সময় নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে ল্যান্ডফোন লাইনগুলো সক্রিয় রাখতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker