আগামী মাসেই প্রথম দিন থেকেই রাত আটটার পর সারা দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচাবাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি সাশ্রয় করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তবে, দোকান মালিক সমিতির বলছেন, বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মার্কেট শপিং মল খোলা রাখা হলে; তাদের জন্য সেটি সহনীয় হবে।
বেশ কিছু আগ থেকেই ঢাকা শহরকে বিশ্রাম দেয়ার জন্য রাত আটটার পর নগরীর সব দোকান, বিপণীকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার কথা বলে আসছিলেন দক্ষিণ সিটির মেয়র।
বিভিন্ন উন্নত ও মেগা শহরের উদাহরণ টেনে তিনি জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি জনজট নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের চলাচল সহজ করতেই শহরকে বিশ্রাম দেয়া প্রয়োজন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। তাই ১ জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধ হবে।
মেয়রের এমন চিন্তা-ভাবনার মধ্যেই রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বিশ্ববাজারে বেড়ে চলছে সব ধরনের জ্বালানির দাম। সেই জ্বালানির দাম সামালাতে হিমশিম খাচ্ছে ধনী গরীব সব দেশই।
জ্বালানি সংকটের মুখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ পুরো নিউ সাউথ ওয়েলসের বাড়িগুলোতে সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির বিদ্যুৎ মন্ত্রী।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের আঁচ লেগেছে বাংলাদেশেও। বিশ্ব বাজারে বেড়ে গেছে তেলের দাম। ডিজেল-অকটেন বিক্রিতে এখন দিনে সরকারের লোকসান গুনতে হচ্ছে একশ’ কোটি টাকা।
যা দিনের পর দিন বহন করা কোন সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। উচ্চ দামে কেনা তেল গ্যাস আর কয়লা দিয়েই আসে বিদ্যুৎ।
এই অবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে রাত ৮টার পর থেকে দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে যাচ্ছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত দাম বাড়ার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীও জানালেন একই কথা। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সাশ্রয় করা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে একই ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।
তবে দোকান মালিক সমিতির দাবি বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা হোক। এতে সব পক্ষের সুবিধা হবে বলেও মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, রাত আটটায় বন্ধ করলে সরকার যদি মনে করে কোথাও সাশ্রয় হবে, তাহলে আমাদের খুব বেশি আপত্তি নেই।
তবে বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলার রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, এতে করে যানজট কমবে। কারণ, সকাল ১০টার মধ্যে দোকান খোলার জন্য কর্মীদের তাড়া থাকবে না।
আরও পড়ুন: রাত ৮টার পর ঢাকায় দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ
আবার রাত আটটার পর যানজট কিছুটা কমে যাওয়ার পর ব্যবসায়ী, দোকানমালিক ও কর্মীরা বাসায় ফেরা শুরু করবেন।
সরকার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, রাত আটটার পর থেকে দোকান বন্ধ রাখতে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই ১ জুলাই থেকে সেটি কার্যকর হবে।
দোকান ও বিপণীকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, বিমানবন্দর থেকে শুরু করে খাবারের স্থান, ওষুধের দোকানসহ মুদি ও নিত্য পণের দোকান খোলা রাখা যাবে।