রোধে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে টানা ২৫ বছর যাবত, গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন জায়গাতে হাতুড়ি দিয়ে ‘ইট ভেঙে খোয়াতে পরিণত’ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন রামপ্রসাদ এবং তার স্ত্রী শান্তি গৌড়ঁ। বয়সের শেষ দিকে পা দিলেও জীবিকার টানে হাড় ভাঙা প্ররিশ্রম যেন পিছু ছাড়েনি।
তারা জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ইস্পাহানী গ্রামের বাসিন্দা। এভাবেই কর্ম করে মানবেতর জীবনযাপন পার করেছেন এই দম্পতি।
গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) সকালে পৌর তাড়িয়াপাড়া এলাকায় ইট ভাঙার এমন চিত্র দেখে জানা যায়, মৃত দূর্গা মহনের ছেলে রামপ্রসাদ গৌড়ঁ (৬০) এবং তার সহধর্মিণী শান্তি গৌড়ঁ (৫৫), তাদের দাম্পত্য জীবনে সময় অতিবাহিত প্রায় ৩৭ বছর। তারা দুই সন্তানের অভিভাবক। সংসার জীবনে প্রতিনিয়তই করে যাচ্ছেন অনেক কষ্ট। ভিটে-মাটি বলতে, পৈতিক সুত্রে অন্যের দান করা সম্পত্তিতেই তাদের বসবাস। এখন আর আগের মত বেশি কাজ করতে পারেন না। দুই ছেলে মতিন গৌড় ও রিপন গৌড়, তাদের কেউ বিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা তাদের মত করেই সংসার করছেন। কেউ আর এখন খোঁজ খবর নেয় না তাদের। তবুও পেটের দায়ে শেষ বয়সে এসেও হাড় ভাঙা প্ররিশ্রম করছেন এই দম্পতি।
রামপ্রসাদ গৌড়ঁকে তার কর্ম বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর ধরে এই ইট ভাঙোনের কাজ করেন। আগে আমি একাই কাজ করেছি, এখন আর আগের মত করতে পারিনা। তাই এখন আমার সাথে আমার স্ত্রীসহ কাজ করেন। প্রতিদিন ৩০০শত ইট দুজনে ভাঙতে পারি। এতে ৪০০-৫০০ টাকা দুজনে উপার্জন করতে পারি। এখন বড় বড় মেশিন নামছে সেইসব মেশিন দিয়ে ইট ভাঙে। সব সময় কাজ পাওয়া যায়না। অনেক সময় বসে থাকি। তখন সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়।
রামপ্রসাদের স্ত্রী শান্তি গৌড়ঁ বলেন, গরিব মানুষের কষ্টের শেষ নেই। কি আর করবো পেটের দায়ে কাজতো করতেই হবে। দুজনে মিলে কাজ করলে কয়ডা টেহা বেশি পাওয়া যায়। সরকার কত জনেকে কত কিছু দিয়ে সাহায্য করেন, আমাদেরকে কোন কিছু দিয়েই সাহায্য করে না। কি আর করার, হয়ত এভাবেই কাজ করতে করতে জীবনটা চিরবিদায় নিয়ে যাবে।
এমন বিষয়ে স্থানীয় শাহিন মিয়া (খোকন) জানান, তারা দুজনেই অনেক প্ররিশ্রম করেন। সত্যিই তারা অনেক গরিব। প্রকৃত পক্ষে তারা সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। এছাড়া ইস্পাহানীতে অনেক এমন অসহায় মানুষ রয়েছে যারা ইট ভেঙে জীবিক সংগ্রহ করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উচিৎ তাদের প্রতি একটু লক্ষ রাখা।