পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাবার কাছে দুই হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে অভিমানে কীটনাশক ট্যাবলেট সেবনে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তানিয়া (১৮) ধুলাসার ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামের মাহাতাব চৌকিদারের মেয়ে। কলাপাড়াস্থ আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তার।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৫ মে) রাতে তানিয়া তার বাবার কাছে কলেজে দেয়ার জন্য দুই হাজার টাকা চায়। তার বাবা এ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে ঘরে থাকা কীটনাশক ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এরপর তানিয়া দৌড়ে পার্শ্ববর্তী দাদার বাড়ি গিয়ে এ কীটনাশক ঔষধ খাওয়ার কথা জানালে বেলা ১১ টার দিকে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাকে।
হাসপাতালে ভর্তির অল্প কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জেএইচ খান লেলিন জানান, নিহত তানিয়া লক নামের এক ধরনের পোকা ও ঘাস ধ্বংস করার ট্যাবলেট সেবন করেন। এ ট্যাবলেটে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ৫৭ ভাগ এ্যালুমিনিয়াম ফসফেট ও ৪৩ ভাগ ইনার্ট ম্যাটিরিয়ালস থাকে। এই ট্যাবলেট অতিরিক্ত সেবনে মানবদেহে রক্ত জমাট বাঁধে এবং কিডনি ও শ্বাসনালী নষ্ট হয়ে মারা যায়।
কলাপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক জিয়াউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তারা নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলাও রুজু করা হয়েছে।
এদিকে, আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সনাতন বিশ্বাস জানান, নিহত তানিয়ার এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। তবে কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ধরণের ফি নির্ধারণ করা হয়নি, তাই কেন কলেজের কথা বলে পিতার কাছে টাকা চেয়েছেন তানিয়া, সে বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান তানিয়ার শিক্ষক।