শত শত যানবাহন চলাচলের প্রধান সড়কে নির্মিত জোড়া-ব্রিজের রেলিং গুলো ভেঙে পড়ায়, মরণফাঁদের কূপ হিসেবে পরিনত হয়েছে ব্রিজটি। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুরর্ঘটনা। তিন রাস্তার এই মোড়ে নির্মিত ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ন হলেও উদাসীন ভূমিকা পালন করছেন কতৃর্পক্ষ।
স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পৌরশহর ঘেঁষা পোগলদিঘা ইউনিয়নের সাইনঞ্চারপাড় এলাকা দিয়ে প্রবাহিত খালের উপড় নির্মিত এই জোড়া ব্রিজটি। ব্রিজটি আনুমানিক প্রায় ৩০বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে।
ব্রিজটি স্থাপনের ফলে প্রধান তিনটি রাস্তা সংযোগ হয়েছে। ব্রিজের একপাশ দিয়ে দিগপাইত-সরিষাবাড়ী বাসন্ট্যান্ড-তারাকান্দি-ভুয়াপুর যাওয়ার প্রধান সড়ক। অন্যপাশ দিয়ে ডোয়াইল-কেন্দুয়া-ধনবাড়ী যাওয়ার সহজ মাধ্যম। তবে বিভিন্ন যানবাহন ক্রসিং এর ধাক্কায় জোড়া ব্রিজের রেলিং গুলো ধীরে ধীরে ভেঙে গেছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই চলাচল করছেন শত শত মালবাহী-যাত্রীবাহী ও জরুরি সেবামুলক যানবাহন। শুধু তাই নয় এই ব্রিজের উপর দিয়ে দেশে সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানার কমান্ডিং এরিয়ার সার, ট্রাক যোগে সরবরাহ করার একমাত্র রাস্তা। তবে সড়ক ও জনপথের মাধ্যমে গড়ে উঠা এই ব্রিজ ও রাস্তাটি খুবই গুরুতপূর্ণ একটি জোড়া-ব্রিজ মোড় বলে জানা যায়।
স্থানীয় মাসুদ মিয়া, আইজ উদ্দিন, মন্টু মিয়াসহ অনেকই জানান, এই ব্রিজের উপর দিয়ে ভারি গাড়ি চলাচল করলে ব্রিজটি কেঁপে উঠে। এছাড়া ব্রিজের সব রেলিং ভেঙে পড়ায় যেকোন সময় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাঁদে পড়ে যেতে পারে। কয়েক বছর আগে সেনাবাহিনীর একটি দল এই ব্রিজের উত্তর পাশে দিয়ে গাড়ি চলাচলের নিষেধ করে ২টি পিলার স্থাপন করে দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়াই এখনও সেই খুঁটি দুইটা সেখানেই আছে। দুরর্ঘটনা হাত থেকে বাঁচতে ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
অটোবাইক চালক শিপন মিয়াসহ গাড়ির অনেক চালকেই বলেন, এক গাড়ি আরেক গাড়িকে সাইড দিতে গেলে একেবারে খাদের ছুছু হয়ে যায়। মনে হয় এখনই ব্রিজ থেকে মাঝের খালি অংশে পড়ে যাবে। বিশেষ করে রাতের বেলাই ব্রিজটিতে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি মেরামত করলে নীরভয়ে গাড়ি চালানো যাবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লাল মিয়া সরকার বলেন, ব্রিজটি অনেক বছরের পুরনো ব্রিজ। উত্তর পাশ দিয়ে চলাচল নিষেধ। সব রেলিং ভেঙে গেছে যেকোন সময় দুরর্ঘটনা ঘটবে। ব্রিজটি দ্রুত সংস্কারে দাবি জানাই।
পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, জোড়া ব্রিজটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের এক অংশে ভারি যান-চলাচল বন্ধ রযেছে। অন্যপাশে চলমান আছে। ব্রিজের প্রায় সব রেলিং ভেঙে গেছে, যেকোন সময় দুরর্ঘটনা ঘটতে পারে। যতটুক জানি ব্রিজটি মুলত এলজিইডি দায়িত্বেই রয়েছে। দুরর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
পৌরসভা মেয়র মনির উদ্দিন বলেন, ব্রিজটি সড়ক ও জনপথে দায়িত্বে সম্ভবত। তারপরও দুরর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল রহমান বলেন, এই ব্রিজটি সড়ক ও জনপথে দায়িত্বে। এখানে এলজিইডির কোন দায়িত্ব নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বলেন, যদি এই ব্রিজটি সড়ক ও জনপথের দায়িত্বে থাকে তাহলে তারাই এই ব্রিজটি সংস্কার করবে। আর যদি এলজিইডির দায়িত্বে থাকে তাহলে এলজিইডি মাধ্যমে কথা বলে সংস্কার করা যাবে।