অজ্ঞাত দুই নারী- একজন বোরখা পরিহিত, অন্যজন সাধারণ পোশাকে, আসেন ব্রাইট জুয়েলার্সে। বিক্রি করতে চান দুটি পুরনো স্বর্ণের চেইন আর এক জোড়া কানের দুল। দোকানদার পরীক্ষা করে দেখলেন সেগুলো স্বর্ণের। এরপর কিছুক্ষণ চলে দরকষাকষি।
এর এক পর্যায়ে দু’পক্ষই একমত হন। দাম মেটে এক লাখ ৬৪ হাজার টাকায়। বিক্রির টাকা নিয়ে দ্রুত চলেও গেলেন দুই নারী।
কিন্তু এরপরই ঘটলো বিপত্তি। তারা চলে যাওয়ার পরই দেখা গেল অলঙ্কারগুলো স্বর্ণের নয়, ওগুলো নকল! ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৫ মে) বিকেলে বগুড়ার শহরের নিউমার্কেটে ব্রাইট জুয়েলার্সে।
প্রতারিত হওয়ার পর উপায় না দেখে ওইদিনই বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ব্রাইট জুয়েলার্সের মালিক আলহাজ্ব মো. আবু ছালাত আমিন। তবে থানায় অবগত করার পর তিনদিন পেরিয়ে গেলেও আশার আলো দেখছেন না তিনি।
সাধারণ ডায়রি সূত্রে জানা যায়, অজ্ঞাত দুই নারী এক শিশুকে নিয়ে জুয়েলার্সে স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল বিক্রি করতে আসেন। তাদের স্বর্ণালঙ্কারগুলো পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় ওগুলো স্বর্ণেরই।
কিন্তু এক পর্যায়ে দুই নারী আসল স্বর্ণালঙ্কার সরিয়ে কৌশলে নকল অলঙ্কার বের করে বদল করেন। বিষয়টি তখন বুঝতে পারেননি জুয়েলার্স মালিক। তিনি স্বর্ণালঙ্কারগুলো কিনে দুই নারীকে মূল্য হিসেবে এক লাখ ৬৪ হাজার টাকা দেন। টাকা পেয়ে তারা চলে যান।
পরবর্তীতে আবারো ওই অলঙ্কারগুলো পরীক্ষা করা হলে তখনই আবু ছালাত বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিনি।
জুয়েলার্সের মালিক আবু ছালাত আমিন বলেন, অজ্ঞাত ওই দুই নারী দুই ভরি সাত আনা তিন রতি পাঁচ পয়েন্টের দুটি স্বর্ণের চেইন ও তিন আনা পাঁচ রতির চার পয়েন্টের এক জোড়া কানের দুল বিক্রি করতে আসেন তার দোকানে। দাম রফা হয় এক লাখ ৬৪ হাজার টাকায়।
তবে দামাদামির এক পর্যায়ে বিক্রি করবেন না বলে তারা দোকান থেকে বের হয়েছিলেন। ওই সময় তারা স্বর্ণের চেইন বদল করেন বলে ধারণা করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নকল স্বর্ণের অলঙ্কারগুলোও দেখতে একই হওয়ায় কিছু বুঝতে পারেননি তিনি। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় ওগুলো নকল।
ঘটনার দিনই সদর থানায় অভিযোগ করলেও বুধবার পর্যন্ত ওই দুই নারীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে দোকানের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও থেকে দুই নারীর ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা জানান, অজ্ঞাত ওই দুই নারীর ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও একটি মুঠোফোনের একটি নম্বরও পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।