দেশের আর্থিক খাতে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ভারতে ধরা পড়লেও, সহসাই তার পাচার করা টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। অর্থ ফেরতে আন্তর্জাতিক আইনের জটিলতাই এর কারণ বলে জানিয়েছেন আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা সংশ্লিষ্টরা।
তবে, প্রশান্ত কুমার হালদারকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব বলে মনে করেন তারা। কাটা দিয়ে কাটা তোলার রাস্তায় যেতে হবে বলেও মত কারো কারো।
২০১৯ সালে দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় স্পটলাইটে আসেন প্রশান্ত কুমার ওরফে পিকে হালদার। তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতসহ পাচারের অভিযোগ পায় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
বিদেশে পালিয়ে যাওয়া পিকে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে পাচার করা অর্থের পরিমাণ জানতে চিঠিও পাঠানো হয়।
অবশেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পিকে হালদারের বিপুল সম্পদ ও অর্থের খোঁজ মেলে। ধরা পড়েন আর্থিক জালিয়াতির অন্যতম এই খলনায়ক।
এবার তার পাচার করা অর্থ ফেরত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দুদকের আইনজীবী জানালেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত পাবার খুব একটা নজির নেই। রয়েছে আইনি জটিলতাও।
তবে, পিকে হালদারকে দ্রুত দেশে ফেরানো হলে জিজ্ঞাসাবাদের পর অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেয়া সম্ভব বলে মনে করেন দুদতের আইনজীবী খুরশীদ আলম।
তিনি জানান, পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ভিত্তিতে সে যা বক্তব্য দেবে তার পরিপূর্ণ প্রতিবেদন ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে চাইবে দুর্নীতি দমন কমিশন।
তিনি বলেন, পিকে হালদার নিয়ে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অর্থপাচারের বিষয়ে ভারত, কানাডা ও দুবাইসহ পৃথিবীর ১৩২টি দেশে চিঠি দিয়েছে। তারই ফসল তার গ্রেপ্তার।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং দুদকের অনুরোধে ভারতের ইডি পিকের যাবতীয় সহায়-সম্পদ খোঁজ শুরু করলেও পুরো কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। এ সম্পদের পেছনে কোন অর্থ পাচার হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে ভারত।
অন্যদিকে আর্থিক খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, পিকে হালদারের রিমান্ডে এমন জালিয়াতিতে যুক্ত আরো অনেকেরই খোঁজ মিলতে পারে।
এর আগেও একাধিকবার অর্থ কেলেঙ্কারির এসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন রাঘল বোয়াল জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিলো পিকে। এখন তারই সুত্র ধরে অর্থের খোঁজে নামার কথা বলছে দুদক।