সাতক্ষীরা

সাবেক স্বামীর দেয়া পেট্রোলের আগুনে তরুণীর মৃত্যু

বর্তমান স্বামীর সঙ্গে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় কপোতাক্ষ নদের তীরে বসে সময় কাটানোর সময় সাবেক স্বামীর দেয়া পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ হন তামান্না খাতুন। তারপর টানা পাঁচদিনের লড়াই শেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন তামান্না।

সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তামান্না খাতুন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন কাশীপুর গ্রামের আব্দুল হকের মেয়ে।

তামান্নার ভাই নাজমুল হোসেন জানান, মালয়েশিয়া প্রবাসী কলারোয়া উপজেলা সদরের তুলসীডাঙা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে দু’বছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তার বড় বোন তামান্না খাতুনের। সম্পর্কের জের ধরে মোবাইলে তাদের বিয়েও হয়। পরবর্তীতে সাদ্দাম বাড়িতে না আসায় তামান্না তাকে তালাক দিয়ে দেয়। গত ১৫ এপ্রিল তামন্নার সঙ্গে পুরাতন সাতক্ষীলার ফরহাদ হোসেনের বিয়ে হয়। এ বিয়েকে মেনে নিতে পারেনি সাদ্দাম হোসেন।

নাজমুল হোসেন আরও জানান, সাদ্দাম এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বাড়িতে আসে। পরবর্তীতে তামান্নার সঙ্গে ফরহাদের বিয়ের খবর জানতে পারে সাদ্দাম। এদিকে গত ২ এপ্রিল ভগ্নিপতি ফরহাদ তাদের বাড়ি বেড়াতে আসেন। ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় তামান্না ও ফরহাদ পাটকেলঘাটা ব্রীজের পার্শ্ববর্তী কপোতাক্ষ নদের তীরে বসে গল্প করছিল। এ সময় সাদ্দাম নিজের গায়ে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে ওই অবস্থায় তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় সাদ্দামের সঙ্গে আরও তিনজন ছিল। সাদ্দাম তার দেহে আগুন জ্বালিয়ে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে বলে যে, তারা একই সাথে মরবে।

এ সময় তামান্নকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে ভগ্নিপতি ফরহাদও অগ্নিদগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৬ এপ্রিল ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটের ৪ তলার ১৫ নম্বর শয্যায় ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সাদ্দামকেও ওই হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় ভর্তি করা হয়।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তামান্না মারা যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে রাতে তামান্নার লাশ বাড়িতে আনা হবে বলেও জানান নাজমুল।

পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় জানান, তামান্নাকে পেট্রোলের আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় তার বাবা আব্দুল হক বাদি হয়ে সাদ্দাস হোসেনসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সাদ্দামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ প্রহরায় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একই হাসপাতালে তামান্না চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন, সেখানে উপস্থিত থাকা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার উপপরিদর্শক কৃষ্ণপদ সমাদ্দার।

ময়না তদন্ত শেষে তামান্নার মরদেহ পাটকেলঘাটার কাশীপুরের নিজ বাড়িতে আনা হবে। আসামি সাদ্দাম হোসেন ও গ্রেপ্তারকৃত কাশীপুর গ্রামের তুহীনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা সম্পৃক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker