নওগাঁ

জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘীতে অতিথি পাখির মিলন মেলা

জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘীতে অতিথি পাখির মিলন মেলার নিরাপদ জায়গা হিসেবে স্থান পেয়েছে। নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলাটি ভারত ভু-খণ্ডের সাথে অবস্থিত। উপজেলার সদর থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর দিকে গ্রামের আঁকা-বাঁকা মেঠো পথ ধরে যে কোন যাত্রীবাহী গাড়ি নিয়ে সহজেই পৌছানো যায় দৃষ্টিনন্দন জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘীতে। উপজেলা সদর থেকে পুর্ব দিকে গিয়ে ধামইরহাট ব্রিজ পেরিয়েই উত্তরে নেমে গেছে আলতাদিঘী পৌছানোর রাস্তাটি। সেই রাস্তায় গেলেই চোখে পড়বে প্রায় ২ শত বছরের পুরোনো প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা শালবন আর শাল গাছের গোড়ায় উইপোকার শৈল্পকিক কারু কার্যের ঢিবি। প্রাকৃতিক এই সুন্দর্য দেখতে দেখতেই পৌছে যাবেন এক সময় নওগাঁর জেলার সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত নয়নাভিরাম জাতীয় উদ্যান আলতাদীঘিতে।

বিশাল আলতাদীঘির জলরাশিতে মনের আনন্দে ভাসছে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী হাজার হাজার পাখি। পাখিদের ছুটাছুটি আর ডানা মেলে আকাশে উড়ান দিয়ে ভ্রমন শেষে আবার নেমে এসে পানিতে সাতার কাটা ডানা মেলে রোদ পোয়া আর পাখিদের খুনসুটি দেখে যে কারই মন ছুঁয়ে দিবে মনে আনবে আনন্দের জোয়ার। এখানে আশা পর্যটকরা কিছু সময় হলেও হারিয়ে যাবে স্বপ্নের জগতে।  আলতাদীঘির পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে রয়েছে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা গহীন শালবন। বনের রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধী গাছ ও বেতের আড়া। দিঘীর উত্তর পাশে রয়েছে ভারত সীমান্ত ঘেরা তাঁরকাটার বেড়া। দিঘীর উত্তর পাড়ে দাঁড়ালে চোখে পড়বে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের টহল।

শীত নামলেই প্রতি বছর এ দিঘীতে আসতে শুরু করে হাজার হাজার অতিথি পাখি ঝাঁক। এবার শীতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি দল বেঁধে অগনিত পাখি ঝাঁক ছুটে আসছে দিঘীতে। এতে দিঘীর চিত্র অনেকটা পাল্টিয়ে যায়। অতিথি পাখিদের কলতানে মুখর হয়ে উঠে আলতাদিঘী চার পাশ। শীত যত বাড়বে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা ততই বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে শীত প্রধান দেশগুলো থেকে এ সব নানান প্রজাতির পাখিদের আগমনে পাল্টিয়ে যায় দিঘীর রুপ।

শীতের সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা আবছায়া আলো আধারের মাঝে পাখির খুনসুটি আর কিচির মিচির ডাক পর্যটকদের নিয়ে যাবে ভিন্ন জগতে। এখানে এলেই চোখে পড়বে, সুদুর সাইবেরিয়া থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসা পরিযায়ী পাখির মিলন মেলা।

অতিথী পাখির মধ্যে রয়েছে, পাতি সরালি, বালি হাঁস, রাজহাঁস, ঝুটি হাঁস, চোখাচখি, চিনা হাঁস, জলপিপি, ডুবুরি পাখি, হরিয়াল পাখি, রাম ঘুঘু, কাঁদাখোচা, পান কৌড়ি, সাদা-কালো বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

প্রতি বছর শীতকালে দিঘীতে আসা এসব পরিযায়ী পাখিরা আলতাদিঘীকে সাজিয়ে তোলে অপরূপ সাজে।  অনেক পাখি এখানে এসে বাচ্চা তোলে। শীতের শেষে পাখি গুলো আবার ফিরে যায় ঐ সব দেশে। সাধারণত আগ্রায়ন মাসে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির অবাদ বিচরণ। এমন মনমুগ্ধকর পরিবেশ দেখতে আলতাদীঘিতে আগমন ঘটে হাজার হাজার পাখি প্রেমিদের। মন চাইলে একবার ঘুরে আসতে পারেন এই আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান থেকে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker