গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সোমবার গোলামনবী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
লাঞ্ছিতরা হলেন, কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার হাপুরখাড়া এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে কামরুল হাসান। তিনি গোলাম নবীমডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক। অপর লাঞ্ছিত হলেন, ওই সহকারী প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী আমেনা খাতুন। ওই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, গোলামনবী মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারীপ্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান গত বছরের আগস্ট মাসে তার বকেয়া তিন মাসের বেতনের কথা প্রতিষ্ঠান প্রধান কে বলেন। বকেয়া বেতন নিতে হলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলকাছ উদ্দিন তার নিকট একটি স্বর্ণের আংটি দাবি করেন।
কিন্তু তিনি আংটি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রধান শিক্ষক তাকে বিভিন্ন সময় হেয় প্রতিপন্ন ও লাঞ্চিত করে আসছেন।
শুধু তাই নয়, ওই সহকারী প্রধান শিক্ষককে চাকরি করার যোগ্য নয় দাবি করে তাকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন ওই প্রধান শিক্ষক । এছাড়া বিভিন্ন সময় তাকে ভয়ভীতিও দেখানো হত তাকে।
গত শনিবার এসব কারণে ওই সহকারী প্রধান শিক্ষক একটি অব্যাহতিপত্র প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দেন। পরের দিন ওই প্রধান শিক্ষক তার সাথে কথা বলার জন্য ফোনে তাকে বিদ্যালয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়টিতে সাহস পাননি।
সোমবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য মীমাংসার কথা বলে তাকে ডেকে পাঠান। তিনি ভয়ে ভয়ে তার স্ত্রী আমেনা খাতুনকে নিয়ে কালিয়াকৈর বাজারে রিমা টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স নামে একটি দোকানে যান এবং আলোচনায় বসেন।
খবর পেয়ে ওই প্রধান শিক্ষক তার দুই কর্মচারী সোহেল রানা ও মালেককে নিয়ে ওই দোকানে যান। এসময় তারা তিনজনে ওই সহকারী প্রধান শিক্ষককে টানাহেঁচড়া করে। এ সময় তারা এলোপাথারিভাবে তাকে মারধর করে। স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করেন। এসময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে।
সোমবার বিকেলে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ওই সহকারী প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক কামরুল জানান, আমার তিন মাসের বকেয়া বেতন পাওয়ার পর ওই প্রধান শিক্ষক আমার কাছে একটি স্বর্ণের আংটি দাবী করে। আংটি না দেওয়ায় তিনি বিভিন্ন সময় খারাপ আচরণ করতেন। আমাকে সবসময় ভয়-ভীতি দেখান।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আলকাছ উদ্দিন বলেন, আমি মারধর করি নাই। উল্টো ওনারাই কর্মচারীদের মারধর করেছে। আমি মারধর করতে যাব কেন।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, এ ঘটনায় উভয় শিক্ষক থানায় দুটি অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, এ বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।