নওগাঁসারাদেশ

নিয়ামতপুরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে নির্যাতন

রায়হান কবির নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ

‌‌‘আমি মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার ঘরে আসি সংসার করার জন্য। বিয়ে হয় ২৫ বছর আগে। দশ বছর সুখেই কাটছিল সংসার। আমাদের ঘরে আসে ৩ মেয়ে ১ ছেলে। বিয়ের দশ বছর পর থেকে শুরু যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ১৫ বছর ধরে সহ্য করছি এই নির্যাতন, শুধুমাত্র সন্তানদের কথা চিন্তা করে।’ চোখের পানি আঁচল দিয়ে মুছতে মুছতে এমনটাই বলছিলেন পাড়ইল ইউনিয়নের দাসড়াই গ্রামের নূরনবীর স্ত্রী সাজেদা বেগম (৪০)। এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দাসড়াই গ্রামের মৃত বছির মন্ডলের ছেলে নুরনবী ২৫ বছর পূর্বে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাজেদা বেগমকে। দশ বছর সংসার করার পর থেকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলো সাজেদা বেগমকে। সর্বশেষ গত ১৬ মে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় নুরনবী স্ত্রী সাজেদা বেগমকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করে। সাজেদা বেগম মারাত্মকভাবে জখম হলে ভাই এসে উদ্ধার করে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সাজেদা বেগম বর্তমানে তার ভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান করছে।

সাজেদা বেগম বলেন, ‍‘আমার স্বামী আমার অনুমতি ছাড়াই এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে। সম্প্রতি ১৫/২০ দিন আগে আমেনা বেগম নামে আরেক মেয়েকে বিয়ে করে আমার ঘরে তুলে। এ নিয়ে আমার স্বামী নূরনবী পাঁচটি বিয়ে করে। শুক্রবার (১৮ জুন) আমাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমার স্বামী বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। গত ২০ জুন রাতে নিজে খড়ে আগুন লাগিয়ে, নিজের শরীরের কাপড় ছিড়ে আমার সতীন আমেনা বেগম আমার ভাই ও প্রতিবেশীকে আসামিকে করে কোর্টে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।’

প্রতিবেশী আব্দুল খালেক বলেন, ‘ঐ রাতে আমেনা ঘরের ভেতর থেকে চিৎকার করে বাঁচাও বাঁচাও বলে। আমি ও আরও প্রতিবেশীরা বের হলে আমরা কাউকে দেখতে পাইনি। শুধুমাত্র সামান্য খড়ে আগুন দেখতে পাই। আমেনাকে দিয়ে সেই আগুন নেভাই। এরপর তাকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। সে সময় তার শারীরে কোনো দাগ বা কাপড় ছেড়া ছিলো না। পরবর্তীতে আমাকে ও সাজেদার ভাইকে ফাঁসানো বা সাজেদার মামলাকে অন্যখাতে নেওয়ার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করে।’
নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির বলেন, ‌‘সাজেদা বেগমের অভিযোগ পেয়েছি। আসামিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker