রাজধানীর মিরপুরের ‘ডন’ হতে চেয়েছিল মো. হৃদয়। সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি চুক্তিতে ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ খুনের মত অপরাধে জড়ায়। ‘ডন’ হতে দুই লাখ টাকা চুক্তিতে শাহাদাত হোসেন ওরফে হাসিব নামের এক কিশোরকে দলবল নিয়ে হত্যা করে হৃদয়। তাকে ঝালকাঠি থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী থেকে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন, মোফাজ্জল হোসেন মন্ডল (৩০) , হুমায়ন কবির (৬৫), মো. আল আমিন আহমদ (১৮) মো. সাদ্দাম (১৬)। এদের মধ্যে হূদয় ও সাদ্দাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুরে উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার এ জেড এম তৈমুর রহমান।
তিনি বলেন, আলোচিত এ হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, শাহাদাতকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় মুলত হাসিবের বাবা ও চাচাদের পৈতৃক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে। এ হত্যায় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় মোট পাঁচ জনের। তাদের মধ্যে তিন জন হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিপুল নামের এক প্রবাসীর বাবার জমিসংক্রান্ত মামলা আছে নিহত শাহাদাতের বাবার সঙ্গে। এ মামলার জেরে শাহাদাতকে মেরে ফেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় মোফাজ্জলকে। হত্যাকাণ্ডের জন্য হৃদয়ের সঙ্গে ২ লাখ টাকার চুক্তি হয়। ঘটনার পর হৃদয় ঢাকা থেকে চাঁদপুরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে ভোলা এবং ভোলা থেকে ঝালকাঠি যান। হত্যাকণ্ডে প্রবাসী বিপুলের সম্পৃক্ততা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, এ হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নেন হুমাযুন কবির, সাদ্দাম, আল আমিন ও হূদয়। এদের মধ্যে হূদয় হাসিবকে ছুরিকাঘাত করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের পর চুক্তি অনুযায়ী টাকা দেওয়া হয়নি হূদয় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এ ঘটনায় বিদেশে অবস্থানরত বিপুলের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
অপরাধিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রথমে হৃদয়কে শনাক্ত করা হয়। পরে ৪০টি মোবাইল নম্বরের তথ্য বিশ্লেষণ করে হৃদয়ের নম্বর পাওয়া যায়। ঘটনার পর হৃদয় নিজেকে আড়াল করতে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে যায়। সেখান থেকে ভোলায় গিয়ে অবস্থান নেয়। পুলিশ যাতে তাকে ধরতে না পারে, তাই সেখানে বেশিদিন অবস্থান না করে ঝালকাঠি যায়।