প্রায় দেড় বছর আগে মাদারীপুরের লক্ষ্মীগঞ্জের কুমার নদের ওপর প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সেতু। সেতু নির্মাণ হলেও হয়নি দুই পাশের সংযোগ সড়ক। সেতু দিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পার হলেও চলাচল করছে না যানবাহন। তাই সেতু থাকতেও অসুস্থ ও মালামাল নিয়ে আগের মতো নৌকায় পাড় হচ্ছে। আর এতে দুর্ভোগে পড়েছে ৬টি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। সেতুটি চালু হলে জেলা সদরের হাজরো মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের এপ্রিলে মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জে এলাকায় কুমার নদের উপর ৯৯ মিটারের একটি সেতু নির্মাণ শুরু করে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর এলজিইডি। চলতি বছরের জুনে কাজের মেয়াদ শেষ হয়। ৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে (হামীম ইন্টারন্যাশনাল নামের) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ৫ কোটি এক লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন তারা। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি সেতুটির দুইপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ। দীর্ঘদিনেও সেতুটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। সংযোগ সড়কের জন্য জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না বলে জানান এলজিইডি এবং সেতুর দুইপাশে একশ’ ১০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মানের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য তিন কোটি ৪২ লাখ টাকা জেলা প্রশাসনের ভুমি অধিগ্রহণ শাখায় জমা দিয়েছেন বলেও জানান তারা। তবে জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে এপ্রোচ সংযোগ সড়কের কাজ আটকে থাকলেও দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানান, একটি পাকা রাস্তা ও কুমার নদীর ওপর সেতু এটাই ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী। কারণ সদর উপজেলার সাথে পাঁচখোলা, রাস্তি, কালিকাপুরসহ অন্তত ৬টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। একটি সেতুর অভাবে স্বাধীনতার পর থেকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল এসব এলাকার মানুষ। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের যাতায়াতসহ কৃষি পণ্য আনা নেওয়ায় ভোগান্তি ছিল চরমে। তবে শেষ পর্যন্ত সেতু হলেও কমেনি দুর্ভোগ। বরং আরো বেড়েছে। কারণ সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না এলাকাবাসী। তার ওপর পায়ে হাঁটার যে রাস্তা রয়েছে সেটিও বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত হয়ে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিমন আক্তার নামে এক গৃহিণী বলেন, সেতু নির্মাণের আগে নৌকায় যেভাবে নদী পাড় হয়েছি এখনও সড়ক ব্যবস্থা না হওয়ায় একইভাবে পারাপার হচ্ছি। ব্রিজের সংযোগ সড়কটি চলাচলের উপযুক্ত নয়। মানুষ নৌকায় পার হয় অথবা ঝুঁকি নিয়ে খানাখন্দ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এতে প্রায়শই দূর্ঘটনা ঘটে। আমরা চাই ব্রিজটি দ্রুত চালু করা হোক।
মাদারীপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, সংযোগ সড়কের জন্য জেলা প্রশাসন জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড: রহিমা খাতুন বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা থাকলেও দ্রুত তা সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি চালু করা যাবে।