থানায় উদ্ধার হওয়া মোটরসাইকেল রেখে অভিযুক্ত ছিনতাইকারী ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ
ভয়ে-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ভুক্তভোগী; ন্যায়বিচারের আশায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ; মধুপুর থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্ধার হওয়া মোটরসাইকেল থানায় জব্দ থাকলেও অভিযুক্ত ছিনতাইকারীকে রহস্যজনকভাবে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মধুপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ভুক্তভোগী মোঃ আশিক (৩৫)।
ভুক্তভোগী আশিক কালিহাতী উপজেলার দ্বিমুখা গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিনের পূর্বশত্রুতার জের ধরে মধুপুর উপজেলার গোপদ গ্রামের আলামিন হোসাইন বাবু (৩২) গত ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে মধুপুর থানাধীন গোপদ গ্রামে এতিমখানা সংলগ্ন বিজয় ইটভাটার সামনে আশিককে জোরপূর্বক অবরুদ্ধ করে তার মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী মধুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আলামিন হোসাইন বাবুসহ ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। উদ্ধারকালে মোটরসাইকেলের চাবি অভিযুক্তের কাছ থেকেই পাওয়া যায় এবং সেই চাবি দিয়েই মোটরসাইকেল স্টার্ট করে থানায় আনা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু পরদিন সকালে ভুক্তভোগী থানায় গিয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে জানতে পারেন— অভিযুক্তের মৌখিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে এবং মোটরসাইকেলটি জব্দ রাখা হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত মোটরসাইকেলটি ভুক্তভোগীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। অথচ সেই বাড়িতে ভুক্তভোগী বিগত এক মাসেও যাননি। স্থানীয় একাধিক সাংবাদিকের সরেজমিন অনুসন্ধানে ভুক্তভোগীর অভিযোগের সত্যতা উঠে এসেছে, যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ভুক্তভোগী মোঃ আশিক অভিযোগ করে বলেন, “আমি আজ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। প্রকাশ্যে আমাকে ছিনতাই করা হলো, পুলিশ আমার মোটরসাইকেল উদ্ধার করলো, কিন্তু অপরাধীকে ছেড়ে দিল। আমি এখন বুঝতে পারছি না— আইনের কাছে গেলে ন্যায়বিচার পাওয়া যায়, নাকি আরও বিপদ বাড়ে। পরিবার নিয়ে ভয়ে দিনাপাত করছি।”
তিনি আরও বলেন, “যদি অভিযুক্তের কোনো দাবি থাকতো, সে আদালতে যেতে পারতো। কিন্তু সে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। তারপরও পুলিশ তার পক্ষ নিচ্ছে— এটা আমার জন্য ভীষণ হতাশার।”
এই ঘটনার পর স্থানীয় পর্যায়ে ন্যায়বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা এবং নিজের ও পরিবারের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল মনে করছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের পুলিশের প্রতি আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে।