নওগাঁ

নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় বিদ্যালয় হতে পালালেন প্রধান শিক্ষক

বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে পরকীয়ার জেরে বরখাস্ত প্রধান শিক্ষকের যোগদানে সংঘর্ষ; শিক্ষার্থীসহ ৫-৭ জন আহত, এলাকায় উত্তেজনা

নওগাঁর বদলগাছী একটি বিদ্যালয়ে পরকীয়ার জেরে বরখাস্ত হওয়া এক প্রধান শিক্ষক যোগদান করতে আসলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে যোগদান করতে আসা ওই প্রধান শিক্ষক পালিয়ে বাঁচেন। এদিকে সংঘর্ষের এই ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ ৫-৭ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যোগদান করতে আসা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম ও সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও ২০২৩ সালে ৫ জুলাই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড ওই প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করে।

আজ বুধবার সকালে ওই প্রধান শিক্ষক তার গ্রামের লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। পরে প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত চলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে বেগুনজোয়ার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল করিম বলেন, “আদালতে মামলা চলমান আছে। আমরা আদালতে খোঁজ নিয়েছি। সে ভুয়া রায়ের কাগজপত্র নিয়ে আজকে তার গ্রামের কিছু লোক নিয়ে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করে। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এসময় প্রায় ৫-৭ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।”

Image

বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম বলেন, “অন্যায়ভাবে ওই প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বরখাস্তের বিরুদ্ধে আমি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। দীর্ঘদিন পর গত মাসে আমার পক্ষে রায় হয়। শুধু রায় হয়নি, আদালত আমাকে বকেয়া বেতনসহ স্বপদে যোগদানের নির্দেশ দেন। রায়ের কাগজপত্র থানা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসে জমা দিয়েছি। আজকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে কিছু শিক্ষার্থী আমার উপর হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গেলে আমি স্থান ত্যাগ করি।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, “কোনো চিঠি এসেছে কিনা এ বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি ছুটিতে ঢাকায় আছি।”

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে ওই প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, “আজকের ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানা নেই। তবে হাইকোর্টের রায় হয়েছে এমন বিষয় শুনেছি। আমি যেহেতু ট্রেনিংয়ে আছি। সুতরাং আমি গিয়ে দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।”

Author

মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker