চট্টগ্রামে ডিবি অভিযানে ৩৪২ মোবাইল, ৬ ল্যাপটপ ও ২ লাখ টাকাসহ ৫ চোর-ছিনতাইকারী গ্রেফতার
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগের এক বিশেষ অভিযানে ৩৪২টি চুরি ও ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন, ৬টি ল্যাপটপ এবং নগদ ২ লক্ষ টাকাসহ চোর ও ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রটি মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় থেকে পকেটমারি, ছিনতাই এবং দেশের বাইরে চোরাই মালামাল পাচার করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি চক্র জনসাধারণের পকেট হতে নগদ টাকা, মোবাইল ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল হাতিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রগুলো সাধারণত ভিড়ের মধ্যে বা জনসমাগমস্থলে বেশি সক্রিয় থাকে। কখনো কখনো তারা যাত্রীবেশী হয়ে বা সাধারণ মানুষের মতো মিশে গিয়েও এই কাজ করে থাকে। এছাড়া, তারা বিভিন্ন উৎসব বা অনুষ্ঠানেও এই ধরনের অপরাধ বেশি করে থাকে। এ চক্রগুলো পকেটমার বা ছিনতাইয়ের সময় কখনো কখনো হিংসাত্মক আচরণ পূর্বক ভিকটিমকে মারধর করতঃ জোর করে মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তারা চুরি/ছিনতাইকৃত মোবাইলগুলো অধিক দামে দেশের বিভিন্ন জেলা সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, মায়ানমার, নেপাল ও ভারতে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশের নিয়মিত অভিযানে এরূপ চক্রের সদস্যরা আটক হয়ে আইনের আওতায় আসলেও পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে পুনরায় একই অপরাধে জড়িত হয়ে পড়ছে।
এই ধারাবাহিকতায় গত **১০/০৭/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ** সিএমপি’র মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগের কর্মরত এসআই (নিঃ) **মোঃ রবিউল ইসলাম** সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান ডিউটি করার সময় রাত ০৯:৩০ ঘটিকার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন মুসলিম হাইস্কুলের গেটের সামনে অবস্থান করাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, সিএমপির কোতোয়ালী থানাধীন, নন্দনকানন ৩নং গলি, হরিশদত্ত লেইন এর ১৫ নং রশিদ মঞ্জিলের (নিচ তলার), মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এর বাসার পূর্ব পাশে সোহেলের ভাড়াকৃত ০২টি কক্ষে কতিপয় ব্যক্তি চোরাইকৃত মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করিতেছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে এসআই (নিঃ) মোঃ রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরচক্রের সদস্যরা কৌশলে দিকে বিদিক পালানোর চেষ্টাকালে ৫ জনকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন:
- ১) **মোঃ তানভির হাসনাইন (৩২)**
- ২) **মোঃ সোহেল উদ্দিন (৩২)**
- ৩) **মোঃ রুবেল প্রকাশ চাকমা রুবেল (৩৬)**
- ৪) **মোঃ মোহাম্মদ হোসাইন (২২)**
- ৫) **আবদুল্লাহ আল মামুন (২৭)**
আসামিদের পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা তাদের হেফাজতে চোরাই মোবাইল আছে মর্মে স্বীকার করে।
অতঃপর আসামিদের স্বীকারোক্তি ও দেখানোমতে ০২নং আসামী সোহেলের ভাড়াকৃত কক্ষ তল্লাশী করে তাদের দেখানো মতে ঘরের মেঝেতে থাকা:
- ১) **৩৪২টি** বিভিন্ন মডেলের ব্যবহৃত মোবাইল সেট (আনুমানিক মূল্য-৩০,০০,০০০/- টাকা)
- ২) **০৬টি** পুরাতন ব্যবহৃত ল্যাপটপ
- ৩) চোরাই মোবাইল ও ল্যাপটপ ক্রয়-বিক্রয়ের নগদ **২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ টাকা)**
উদ্ধার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা হতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মোবাইল এবং মালামালগুলো অধিক দামে দেশের বিভিন্ন জেলা সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, মায়ানমার, নেপাল ও ভারতে পাঠিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী **মোঃ তানভির হাসনাইন (৩২)** ও **মোঃ সোহেল উদ্দিন (৩২)**-এর বিরুদ্ধে সিএমপি’র কোতোয়ালী থানা সহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি, ছিনতাই ও অস্ত্র আইনে **০৪টি মামলা** এবং আসামী **মোঃ রুবেল প্রকাশ চাকমা রুবেল (৩৬)**-এর **০৫টি মামলা** রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।