চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল সিটি হাসপাতাল বন্ধের প্রতিবাদ, সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ

চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়স্থ সেন্ট্রাল সিটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিলগালা করে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. রেজাউল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, বাড়িওয়ালার অন্যায় অভিযোগের ভিত্তিতে সিভিল সার্জন কার্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উচ্ছেদ করতে অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছে।

গত **২৯শে জুন** চট্টগ্রাম নগরীর প্রবর্তক মোড়স্থ সেন্ট্রাল সিটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক কর্তৃপক্ষকে কোনো রকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে সিভিল সার্জন কার্যালয় কর্তৃক হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক **ডা. মো. রেজাউল ইসলাম**।

**বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই)** গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “হাসপাতাল বন্ধের এই পদক্ষেপ কেবল অন্যায় নয়, বরং সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়ে, তাদের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করে এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই হাসপাতালটি সুনামের সাথে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছে। এমন একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যাচাই-বাছাই না করে এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা জনসেবামূলক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে।”

তিনি আরো বলেন, “বাড়িওয়ালার অন্যায় অভিযোগের ভিত্তিতেই চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় বাড়িওয়ালাকে অবৈধভাবে হাসপাতালের দখল দেওয়ার জন্য এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উচ্ছেদ করতেই এইসব অবৈধ কার্যক্রম করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত **বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)** হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নোটিশ দেয় সিভিল সার্জন কার্যালয়। আমরা নোটিশ পেয়েই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিই এবং কেয়ারটেকারকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিই। কিন্তু **রবিবার (২৯ জুন)** তারা আবার তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ডাক্তার, নার্স পাওয়া যায়নি বলে মিডিয়ার সামনে মিথ্যাচার করে যে বক্তব্য দিয়েছে তাতেই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয় যে, তারা এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই করেছে। এছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিদ্যুৎ অফিসে বারবার ফোন করে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে বলেছে।”

তিনি বলেন, “এই প্রতিষ্ঠানের ভবনটি হাসপাতাল সংক্রান্ত ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে হাটহাজারীর নাঙ্গল মোড়ার **মো. সৈয়দ মিয়া** হতে ভাড়ায় গ্রহণ করি। যাহা একটি জরাজীর্ণ ভবন ছিল মাত্র। আমি বিভিন্নজন হতে বিনিয়োগ ও ঋণ গ্রহণ করে এই জরাজীর্ণ ভবনে প্রায় **পাঁচ কোটি টাকা** বিনিয়োগ করে একটি আধুনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ ফার্মেসি, ডেন্টাল চেম্বার, মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল মার্ট প্রতিষ্ঠা করি। প্রতিষ্ঠার কিছুদিন পরেই বাড়িওয়ালা, স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসা করার জন্য আমাদের নিকট হতে হাসপাতালের অভ্যন্তরে অনৈতিকভাবে একটি অফিস রুম দাবি করে এবং হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স স্বর্ণ চোরাচালানের জন্য ব্যবহার করার কুপ্রস্তাব দেয়। আমরা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাদেরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। ঘরভাড়া চুক্তি বলবৎ থাকা অবস্থাতেই, আমাদের নিকট অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে এবং তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি হাসপাতালকে কুক্ষিগত করে আমাদেরকে উক্ত দালান হইতে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করার জন্য নানাভাবে পাঁয়তারা শুরু করেন। আমাদেরকে হয়রানি করবার উদ্দেশ্যে আইন বহির্ভূতভাবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আমার ও আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানান ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রদান করে নানাভাবে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে আসছেন।”

তিনি বলেন, “বাড়িওয়ালার বিষয় নিয়ে আমরা হাইকোর্টে একটি রীট করেছিলাম। সেখানে হাইকোর্ট ব্যক্তিগত বিরোধের মধ্যে প্রশাসনকে ব্যবহার না করতে সুস্পষ্টভাবে নিরুৎসাহিত করেছেন। বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া সংক্রান্ত ইস্যু আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির নির্দেশনাও দেয়। মহামান্য হাইকোর্টের সেই রায় অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সুস্পষ্টভাবে তাদের রিপোর্টে সেটা উল্লেখ করেছেন। তারপরও বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া ইস্যু নিয়ে প্রশাসনের গুটিকয়েক মানুষের নগ্ন হস্তক্ষেপে সমগ্র বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং এটি আদালত অবমাননাও বটে।”

“আমরা অবিলম্বে এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হাসপাতালটি পুনরায় খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।”

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker