জাতীয়

স্টারলিঙ্কের পর বাংলাদেশে আসছে চীনা জায়ান্ট টেনসেন্ট, কী ব্যবসা তাদের?

মার্কিন মহাকাশ ইন্টারনেট প্রকল্প স্টারলিংকের পর এবার বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট। মোবাইল গেম ‘পাবজি’ এবং সুপার অ্যাপ ‘উইচ্যাট’-এর নির্মাতা এই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সফটওয়্যার ও প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুসের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব এক ফেসবুক পোস্টে টেনসেন্টের আগ্রহের কথা জানান।

ফয়েজ আহমেদ লেখেন, “বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এই যাত্রা শুরু হয়েছে অধ্যাপক ইউনুসের হাত ধরেই। এবার চীনা টেক জায়ান্ট টেনসেন্টও বাংলাদেশে আসতে যাচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্কে একটি হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ‘যাত্রা’ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগী ‘অসাইরিস গ্রুপ’। এখানেই বিশ্বমানের সিকিউরিটি ক্লাউড সেটআপ হবে, যেখানে গুগল ও মেটার মত বিগটেক প্রতিষ্ঠানগুলোরও সুযোগ থাকবে প্রবেশের।

টেনসেন্ট কে এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ? ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত টেনসেন্ট এখন বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর একটি। এটি জনপ্রিয় গেমস যেমন ‘পাবজি’, ‘লিগ অফ লেজেন্ডস’, ‘ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যানস’-এর মতো গেমের নির্মাতা বা বিনিয়োগকারী। পাশাপাশি এর তৈরি ‘উইচ্যাট’ চীনে একটি সুপার অ্যাপ হিসেবে ব্যবহার হয়, যেখানে মেসেজিং, মোবাইল পেমেন্ট, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, ফুড ডেলিভারি থেকে শুরু করে ট্যাক্সি বুকিং পর্যন্ত নানা সুবিধা একসঙ্গে পাওয়া যায়।

টেনসেন্ট ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি খাতে ‘অ্যাভাল্যাঞ্চ’-এর মালিকানাও রাখে। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি হলিউডে হান্ডার, ওমেন, ভেনমের মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছে।

বাংলাদেশের গেমিং খাত নিয়ে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় একটি সেমিনারে জানানো হয়, বিশ্বের গেমিং বাজার ইতোমধ্যেই ২০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা সংগীত ও চলচ্চিত্র শিল্পের সম্মিলিত আকারের চেয়েও বড়। সেখানে বাংলাদেশের অংশ এখনও সীমিত—প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪২৮ কোটি টাকার মতো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, টেনসেন্টের মতো গ্লোবাল প্লেয়ার আসলে দেশে গেমিং, মোবাইল অ্যাপ, ক্লাউড সার্ভিস, ওটিটি এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব হবে। প্রযুক্তির পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগেও টেনসেন্টের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য অ্যাক্সেসিবল থিয়েটার নির্মাণের মত উদ্ভাবনী প্রকল্পও হাতে নিয়েছে তারা।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker