জাতীয়

যেভাবে রণাঙ্গণের হিসাব পাল্টাতে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বাংলাদেশ!

চূড়ান্ত যুদ্ধে আরাকান আর্মি,

আবারো ফ্রন্ট ফুটে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। ক্ষতি কাটিয়ে বাড়ানো হয়েছে অভিযানের গতি, যাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সেনারা। রণাঙ্গনের জটিল সমীকরণে জয়-পরাজয়ের পাল্লা নির্ধারণ এখনো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই যেকোনো পক্ষে সমর্থন প্রদানের বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

প্রতি মুহূর্তেই মিয়ানমারে বাড়ছে সংঘর্ষের মাত্রা। ভূমিকম্পের কারণে বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতির ডাক দিলেও তা উপেক্ষা করেই হামলা চালাচ্ছে জান্তা সরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরও হামলা চালানো হয়েছে অর্ধশতাধিক বার।

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া ডট কম। যেখানে উল্লেখ করা হয়, রাখাইন রাজ্যের ৯০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে বিদ্রোহীদের দখলে। যদিও গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শহরের নিয়ন্ত্রণ এখনো ধরে রেখেছে জান্তা সরকার। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, সিত্তে, কিয়াকপিউ ও মংডুতে শীঘ্রই জান্তার সেনাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে গোষ্ঠীটি।

অভিযান সফল হবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে পারে বাংলাদেশ। কারণ আরাকান আর্মির সাপ্লাই লাইন চালু রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য বিকল্প নেই বিদ্রোহীদের হাতে। মিয়ানমার থেকে চীনের প্রভাব কমাতে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে যুক্তরাষ্ট্রও। যদিও বিদ্রোহীদের সমর্থন দিতে রাজি নন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান।

গেল মাসের শেষে ঢাকা সফরে আসেন মার্কিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল বি ভোয়েল। দুইদিনের সফরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউএস আর্মির প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ডেপুটি কমান্ডার।

ইন্ডিয়া ডট কম এর দাবি, বিদ্রোহীদের সহায়তা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশ সফরে আসেন ভোয়েল। তবে এ সময় আরাকান আর্মির জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানান বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

এছাড়াও ২ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অ্যালেক্স নেলসন। ফোনালাপের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জানায়নি কোনো পক্ষ। যদিও সূত্রের দাবি, আরাকান আর্মির সাপ্লাই রোড চালু রাখতে বাংলাদেশের সাহায্য চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরাকান আর্মির জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক টার্গেট সিত্তে দখল। ভারতের কাছেও এই শহরটির গুরুত্ব ব্যাপক। কারণ কালাদান মাল্টিমডেল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের বিশেষ অংশ সিত্তে বন্দর। ভারত মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের ত্রিদেশীয় হাইওয়ে প্রকল্পে ইতোমধ্যে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে মোদি সরকার। এছাড়াও সিত্তে বন্দরের সঙ্গে সীমান্ত সংযোগ রয়েছে মিজোরামের।

এছাড়াও আরাকান আর্মির অভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়। বিশ্লেষকদের ধারণা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি তিনটি শর্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে সহায়তা করতে পারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শর্তগুলো হলো- রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলে নো ফ্লাইং জোন ঘোষণা, নিরাপদ করিডোর তৈরি ও গোষ্ঠীটির আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত। এই শর্তগুলো চুক্তিতে রূপান্তরিত হলে দক্ষিণ এশিয়ার মুকুটবিহীন সম্রাটে পরিণত হবেন ডক্টর ইউনূস। আর ইতোমধ্যেই ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে জান্তা সরকার।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker