ক্রিকেট

শেষটায় থেমে গেলো টীম টাইগার

পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। তবে শেষ ম্যাচটা জিততে পারলো না টাইগাররা। প্রতিপক্ষের দেওয়া ১৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৩৪ রানে শেষ হয় স্বাগতিকদের ইনিংস। ফলে ২৭ রানে হারলেও ৩-২‌’ এ সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।

ভাগ্যিস সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত হয়েছে! তাই অনেকটাই নির্ভার ছিল টিম বাংলাদেশ। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচটা রঙিন হোক এটাই হয়েতো সবার চাওয়া ছিল। কিন্তু শেষটা রঙিন হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। কারণ এই সিরিজের সর্বোচ্চ ১৬২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫০ রানের আগেই ফিরে যান টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান। তাই যথারীতি পরাজয়ের তিক্ততাই জুটল স্বাগতিকদের কপালে।

পুরো সিরিজে রান খরায় ভুগছিল দু‌’দলই। শেষ ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোর গড়ে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। ২০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৬১ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে দেখেশুনে খেলা শুরু করেন দুই টাইগার ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম। ইনিংসের শুরুতে চার মেরে রানের খাতা খোলেন নাঈম। জ্যাকব ডাফির প্রথম ওভারেই আসে ৮ রান।

তবে হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে টাইগার শিবিরে। ফিরে যান লিটন। তার ব্যাট থেকে ১০ রান। এরপর ব্যর্থ হন সৌম্য সরকারও। মাত্র ৪ রানেই থামে তার ইনিংস। অন্যপ্রান্তে ভালোই খেলতে থাকা নাঈমের যেন ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে যায়। ২১ বলে ২৩ রান করে বিদায়ঘণ্টা বাজে তারও। ভরসা ছিল মুশফিকের ওপর। কিন্তু রাচিন রবীন্দ্রর বলে সে আশাও শেষ হয়ে যায়। মুশির ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৩ রান।

এরপর হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। দু‌’জন মিলে শাসন করতে থাকেন প্রতিপক্ষ বোলারদের। চার-ছক্কায় জমিয়ে তোলেন ম্যাচ। দু‌’জন মিলে জুটি গড়েন ৬৩ রানের। তবে ২১ বলে ২৩ রান করে আউট হয়ে যান রিয়াদ। কুগেলেইনের বলে অ্যালেনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর নুরুল হাসান সোহানও উইকেটে থিতু হতে পারেননি। এলবিডব্লিউ‌’র ফাঁদে পড়ে ফিরে যান সোহান। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। ব্যর্থতার পরিচয় দেন শামীম পাটোয়ারীও। তার ব্যাটে রান আসে ২। তবে অন্যপ্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন আফিফ। শেষ পর্যন্ত ৩৩ বলে সর্বোচ্চ ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৩৪ রান।

এর আগে শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সফরকারী নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম।

আগের ব্যর্থতা ভুলে এদিন শুরুতেই ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করে নিউজিল্যান্ড। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের চাপে রাখে দুই ওপেনার। নির্ধারিত ২০ ওভারে সফরকারীরা সংগ্রহ করে ৫ উইকেটে ১৬১ রান। ফলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬২ রান।

এদিন শুরুতেই তাসকিন, নাসুম ও শরীফুলদের কোন সুযোগ না দিয়ে সাবলীল খেলতে থাকেন দুই কিউই ওপেনার। ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্র মিলে গড়েন ৫৮ রানের জুটি।   রাচিন করেন ১২ বলে ১৭ রান। বাংলাদেশের হয়ে শরীফুল প্রথম আঘাত হানেন। তার বলে মিড-অফে মুশফিক নিয়েছেন ক্যাচ। তবে উইকেটের পতন আরও আগে হতে পারতো। নাসুমের শর্ট লেংথের বল টেনে মেরেছিলেন রাচিন রবীন্দ্র কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে সেটি হাতে রাখতে পারেননি শামীম।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় শরীফুলের হাত ধরেই। এবার তার শিকার অ্যালেন। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে অ্যালেন করেন ২৪ বলে ৪১ রান। এরপর মাঠে নামে নামেন অধিনায়ক টম লাথাম। জুটি গড়েন উইল ইয়ংয়ের সাথে। তবে ইয়ং বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ফিরে গেছেন মাত্র ৬ রান করে। আফিফের বলে কাটা পড়েন তিনি। এরপর গ্র্যান্ডহোমকে সিরিজে চতুর্থবারের মতো ফেরান নাসুম আহমেদ। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। তবে অন্যপ্রান্তে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন লাথাম। তুলে নিয়েছেন অর্ধশত। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৫০ রানে।

এছাড়া নিকোলাসও ভালো শুরু করেন। ২১ বলে ২০ রান করে সচল রাখেন রানের চাকা। তবে তাকে ফিরিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। শেষদিকে ম্যাকঞ্চি করেন ১০ বলে ১৭ রান।

বাংলাদেশের হয়ে শরীফুল নিয়েছেন ২টি উইকেট। এছাড়া তাসকিন, নাসুম এবং আফিফ নেন ১টি করে উইকেট।

শেষ ম্যাচে চারটি পরিবর্তন নিয়ে পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে খেলেননি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার স্থলে দলে ফেরেন সৌম্য সরকার। এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়া বেশ ক‌’জনকে সুযোগ দেওয়া হয় শেষ ম্যাচে। শামীম হোসেন, শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদকেও সুযোগ দেওয়া হয় এই ম্যাচে। দলে ছিলেন না মেহেদি হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

এদিকে নিউজিল্যান্ড দলও কয়েকটি পরিবর্তন নিয়ে নামে। আগের ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় চোট পাওয়া টম ব্লান্ডেল ছিটকে গেছেন এ ম্যাচ থেকে। কিউইদের একাদশে আরও দুটি পরিবর্তন ব্লেয়ার টিকনার ও হামিশ বেনেটের জায়গায় নামেন স্কট কুগেলেইন ও বেন সিয়ার্স। খেলেছেন জ্যাকব ডাফিও। 


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker