জাতীয়

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় তিন তদন্ত কমিটি

দেশের চার বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) নির্বাহী পরিচালক (পি অ্যান্ড ডি) ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগকে আরো দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনের পূর্বাঞ্চলে বিভ্রাটের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের অর্ধেক অঞ্চলের বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ ফেরাতে কাজ করেন।

রাত ১০টার দিকে ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এই দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহান বিদ্যুৎহীন এলাকার মানুষ। মোবাইল নেটওয়ার্কেও দেখা দেয় বিভ্রাট।

বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু

প্রায় চার ঘণ্টা পর রাজধানী ঢাকার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরা, গুলশান, বারিধারা, মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে। 

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির কাউসার আলী বলেন, এখন ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন।

গুলশান, বনানী মিরপুর ও গাজীপুর এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডোসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন তাদের এক হাজার মেগাওয়াট চাহিদার প্রায় অর্ধেক মিটে গেছে। ৪৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ধীরে ধীরে সরবরাহ শুরু করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ ও পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। বাকিরাও দ্রুত বিদ্যুৎ পেয়ে যাবেন।

ধৈর্য ধরার অনুরোধ বিদ্যুৎ বিভাগের

জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের মধ্যে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। 

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত একটি বার্তায় বলা হয়, আকস্মিকভাবে আজ দুপুর ২টা ৪ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের ইস্টার্ন অংশে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ) সমস্যা দেখা দেওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিবি) এর প্রকৌশলীরা দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় গ্রিড সচল করতে নিবিড় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ সেবা চালু করা হবে বলে আশা করা যায়।

সেই বার্তায় আরো জানানো হয়, পিজিসিবি-সহ বিদ্যুৎ খাতের সব সংস্থা একযোগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।

রাজধানীর পূজা মণ্ডপে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশনা

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা দুপুর থেকে বিদ্যুৎহীন। হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গা পূজার আজ নবমী। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ রাজধানীর সব পূজা মণ্ডপে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাজধানীর যেসব পূজা মণ্ডপে জেনারেটর নেই সেখানে সন্ধ্যার আগেই জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হবে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও করা হবে। পূজা মণ্ডপ মনিটরিংয়ের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা সচল রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এছাড়া পোশাকে ও সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক টহল ও নজরদারি বাড়াতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে ডিএমপি।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার ফারুক হোসেন এ বিষয়ে বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুতের সমস্যা হয়েছে। সেটা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে আমরা জেনেছি। এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গা পূজায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পূজা মণ্ডপের ভেতরে বাইরে ও আশপাশে সার্বক্ষণিক টহল, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। ডিএমপি’র প্রত্যেকটি থানা, ডিবি ও প্রত্যেকটি ক্রাইম ডিভিশনকে ইতোমধ্যে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় পূজা মণ্ডপ বেশি এবং বড় বড় মণ্ডপ রয়েছে সেখানে বেশি সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। পূজা মণ্ডপগুলোয় পর্যাপ্ত আলোর বাড়াতে জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে পূজা কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে।

চরম ভোগান্তিতে চট্টগ্রাম মেডিকেলের রোগীরা

বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীরা।

গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে সারাদেশের পাশাপাশি ভুগছে চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরাও।

জেনারেটরের সাহায্যে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও সার্বিকভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। মোটামুটিভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। অস্ত্রোপচার কক্ষ, সিসিইউ, আইসিইউ চলছে। ওয়ার্ডে লাইট জ্বলছে। কিছু সমস্যা তো থাকবেই। তবে, আমরা তেল মজুত করে রেখেছি, যাতে বিদ্যুৎ না এলেও চালানো যায়।’

বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে কয়েকটি ওয়ার্ডে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের দু’একটি বৈদ্যুতিক বাতি ছাড়া পাখা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। এমনকি নেবুলাইজার মেশিন চালানোর সকেটও বন্ধ রাখা হয়।

বিকেল সাড়ে ৪টায় হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের নেবুলাইজ করা যাচ্ছে না। ওয়ার্ডটিতে শতাধিক রোগী ভর্তি আছেন।

বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ওয়ার্ডে গরমে রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের হাতপাখা বা বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে বাতাস করছেন স্বজনরা। ওয়ার্ডে দু-একটি বৈদ্যুতিক বাতি জ্বললেও পর্যাপ্ত আলো ছিল না।

ঢাকা-চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে ৯টার মধ্যে

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টার মধ্যে ঢাকা শহরের সব এলাকা এবং ৯টার মধ্যে চট্টগ্রামের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেল পাঁচটার দিকে প্রতিমন্ত্রী তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে এ ঘোষণা দেন।

দুপুর ২টা পাঁচ মিনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দেশের বড় একটি এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।

পলক তার ফেসবুকে লেখেন, ‘পাওয়ার গ্রিডে ট্রিপ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ আপডেট- আমিন বাজার গ্রিড পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। পাওয়ার গ্রিডে ট্রিপ এক সেকেন্ডে হলেও রিস্টরেশন অনেক লম্বা আর জটিল প্রসেস।’

‘সন্ধ্যার থেকে রাত ৮টার মধ্যে ঢাকা শহরের সব এলাকা এবং তারপর ৯টার মধ্যে চট্টগ্রামের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। পাওয়ার গ্রিডের ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন, গুজব না ছড়িয়ে একটু ধৈর্য ধরার অনুরোধ থাকলো শহর অঞ্চলের সবার প্রতি।’

শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ব্যাহত

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০ মিনিটের জন্য ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। অধিকাংশ এসি বন্ধ রেখে জেনারেটর ছেড়ে কার্যক্রম চলছে।

এদিকে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্বে হয়েছে। ফলে যাত্রীদের পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর থেকে প্রায় তিনটা পর্যন্ত বিমানবন্দরে এই বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেয়।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব বিমানবন্দরে পড়েছে। দুপুরে বিদ্যুৎ সেবা বন্ধ ছিল। তবে, পরবর্তীতে বিশেষ ব্যবস্থায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হয়েছে।

বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুৎ সমস্যায় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকার নেতিবাচক প্রভাব পুরো বিমানবন্দরে পড়বে। অনেক ফ্লাইট ডিলে হবে। এর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে অন্তত তিনদিন সময় লাগবে।

বাসা-বাড়িতে ইন্টারনেট সেবায় বিপর্যয়, ভরসা মোবাইল ফোন

মঙ্গলবার দুপুর ২টা পাঁচ মিনিট থেকে দেশের বড় একটি এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণেই এ বিপর্যয়।

লোডশেডিংয়ের ফলে টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সেবায়ও বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছি।

বাসা-বাড়িতে ইন্টারনেট সেবা না পেয়ে অনেকেরই ভরসা এখন মোবাইল ফোন।

ইন্টারনেট সেবা সরবরাহের অন্যতম কাঁচামাল বিদ্যুৎ। মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দিতে সারাদেশে লক্ষাধিক বিটিএস টাওয়ার রয়েছে, যা বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালিত।

তাছাড়া প্রত্যেকটি অপারেটরের জোন ভিত্তিক অপারেশন কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এমনকি আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলির অপারেশন কেন্দ্রও বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালিত হয়।

এমতাবস্থায় হুট করেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে টেলিযোগ ও ইন্টারনেট সেবায় ব্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এক বিবৃতিতে এমটব জানায়, জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য টেলিযোগাযোগ সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। এই সাময়িক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এমটব বলছে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে টেলিযোগাযোগ সেবাও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।

পাড়া-মহল্লায় মোমবাতি ও হারিকেন কেনার হিড়িক

বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে দেশের বড় একটি এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে আরো বেশ কিছুটা সময় লাগবে। নির্দিষ্ট করে এখনি কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেল থেকে পাড়া-মহল্লায় মোমবাতি, হ্যারিকেনসহ চার্জার বাতির চাহিদা বেড়েছে।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঘুরে ঘুরে মোমবাতি ও দেশলাই সংগ্রহ করছেন অনেকেই।

তবে, অনেক ব্যবসায়ী এ সুযোগে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি দাম রাখছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সন্ধ্যার ভেতর বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ঠিক হতে পারে: প্রতিমন্ত্রী

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে সরবরাহ বন্ধ আছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। 

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) টেলিফোনে আলাপকালে এসব তথ্য একাত্তরকে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 

তিনি জানান, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। 

সন্ধ্যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আশাবাদ প্রকাশ করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর। 

মন্ত্রী জানান, সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। 

এই ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিদ্যুৎহীন দেশের বেশিরভাগ এলাকা

জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে দেশের বেশিরভাগ স্থানে বিদ্যুৎ নেই।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক শামীম হাসান  বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চলছে।

কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষ। তবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালুর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে ডিপিডিসি ও ডেসকো। 

বাংলাদেশ পাওয়ার গ্ৰিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) জানিয়েছ, জাতীয় গ্ৰিডে ত্রুটির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। 

পিজিসিবি আরো জানিয়েছে, জাতীয় গ্ৰিডের ত্রুটি ঠিক করার জন্য এরিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এ ধরণের পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আট থেকে দশ ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।

পিডিবির কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার দুপুর দুইটা পাঁচ মিনিটে এই বিপর্যয় ঘটে। ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লার বড় অংশে বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। দুপুর তিনটা দশ মিনিটের দিকে যমুনা নদীর পাড় থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা গেছে। বাকি অংশে কাজে চলছে। তবে কত সময় লাগবে সেটা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

কিছুক্ষণ আগে জানা গেছে, খুলনা অঞ্চল বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। উল্লেখ্য, জাতীয় গ্ৰিডে এমন ধরনের বড় বিপর্যয় সবশেষ ঘটেছিলো ২০১৪ সালে।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker